আদালতের নির্দেশে প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকার চাকরি বাতিল নিয়ে নাম না করে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে হুঁশিয়ারি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।বৃহস্পতিবার মেদিনীপুরের তৃণমূল প্রার্থী জুন মালিয়ার সমর্থনে দাঁতনে জনসভা করেছেন নেত্রী। এর পর তিনি তমলুকে দেবাংশু ভট্টাচার্যর হয়ে মহিষাদলে নির্বাচনী প্রচার করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই মঞ্চ থেকে নাম না করে শুভেন্দুর উদ্দেশে তৃণমূলনেত্রী বলেন, ‘‘রায় বেরোনোর ৪৮ ঘণ্টা আগে তুমি জানলে কী করে? রায়টা কি তুমি লিখে দিয়েছিলে? না কি তোমার পার্টি অফিস থেকে লিখে দিয়েছিল?’’ গত শনিবার শুভেন্দু বলেছিলেন, ‘‘সামনের সপ্তাহে একটা এমন বোমা ফাটবে যে গোটা তৃণমূলটা বেসামাল হয়ে যাবে।’’ গত সোমবার নিয়োগ মামলার রায় দিয়েছিল বিচারপতি দেবাংশু বসাকের ডিভিশন বেঞ্চ। সে দিন থেকে রাজনৈতিক মহলে অনেকেই শুভেন্দুর ‘বোমা হুঁশিয়ারি’র সঙ্গে রায়কে জুড়ে দেখতে চেয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়ে মমতা বলেন, ‘‘এই যে ২৬ হাজারের চাকরি খেয়েছে, আড়াই লক্ষ পরিবার আজকে মৃত্যুর সামনে লড়াই করছে। এক জনের কিছু হলে, এরা কিন্তু তোমার বাড়ির সামনে আসবে, বিচার চাইবে।’’ মমতা আরও বলেন, ‘‘এঁদের মধ্যে নিশ্চয়ই অনেকে মেদিনীপুরের রয়েছেন। মনে রাখবেন, আমরা কিন্তু আপনাদের পাশে রয়েছি।’’ প্রায় প্রতিটি সভা থেকেই তৃণমূল এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সরাসরি ‘চোর’ বলে আক্রমণ শানাচ্ছেন শুভেন্দু। মহিষাদলের সভা থেকে নাম না করে মমতা বলেন, ‘‘তৃণমূল চুরিটা তোর থেকে শিখেছে। তৃণমূলের কেউ চুরি করে না। তুই আসল কাজটা করে সিবিআই, ইডির ভয়ে পালিয়ে গেছিস।’’ মমতার বক্তব্যে উঠে এল নন্দীগ্রাম আন্দোলন প্রসঙ্গ। তাঁর কথায়, ”নন্দীগ্রাম আন্দোলনের সময় ১০ দিন ছিল না পিতা-পুত্র, বাইরেই বেরয়নি। আমি আমার বইতে তবু ওঁদের কথা লিখেছিলাম। কারণ, তখন দলের লোক ছিল। তাঁদের প্রতি সম্মান জানিয়ে নাম উল্লেখ করেছিলাম। এখন বই লিখলে অন্যভাবে লিখতাম।” মমতার আক্রমণ থেকে বাদ যায়নি তমলুকের বিজেপি প্রার্থী অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ও। বিচারপতি থেকে বিজেপি নেতা হওয়া অভিজিতের উদ্দেশে মমতা বলেন, ”আর এখানকার বিজেপি প্রার্থী তো একেবারে মহানুভব প্রার্থী। ঈশ্বরের ঠিক পরেই নাকি আবার ঈশ্বরের উপরে? বিচারপতির আসনে বসে বিজেপির সঙ্গে ফোনে কথা বলতেন, নিজেই বলেছেন। বিচারপতি হয়ে সবচেয়ে বেশি চাকরি খেয়েছেন। প্রার্থী হয়ে উনি ভাবছেন, এটাও বিচারালয়। এখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগ চাইছেন। আরে আগে দেহত্যাগ করুন, লজ্জা ঢাকুন। কী বলব তাঁকে? আপনারা নাম বলবেন। তাঁকে বিতাড়িত করে দিন। আপনি বিচারব্যবস্থার কলঙ্ক। ছিলেন বিকাশরঞ্জনের জুনিয়র। এখন গদ্দারের সিনিয়র। আগে দেবাংশুর সঙ্গে লড়ুন, তার পর মমতাকে গালাগালি করবেন। আমরা এখানে অন্য প্রার্থী দিইনি ইচ্ছে করি। ছাত্র, যুবদের চাকরি খেয়েছেন, ছেড়ে দেব?”