অশোক বন্দ্যোপাধ্যায়: শীতের এই সময় সাবধান, কেউটে ও চন্দ্রবোড়া বিষধর সরীসৃপেরা রোদ পোয়ানোর জন্য বাড়ির কাছে জঙ্গলে আসবেই। বলছে বন বিভাগ । ফলে বাড়ির গায়ে কোথাও জঙ্গল থাকলে সেখানে যাওয়ার আগে সতর্ক থাকবেন। শুধু তাই নয়, জঙ্গলের ধার ঘেঁষে জানলা ও তার উপর কার্নিশ থাকলে তা বন্ধ করে রাখুন।
কারণ কেউটেরা রোদ পোয়ানোর জন্য ওই কার্নিশে উঠে যেতে পারে। যদি জানলা খোলা থাকে, তাহলে সেই জায়গা দিয়ে ঘরের ভিতর চলে যেতে পারে। বন বিভাগের আধিকারিক রা বলছেন, এই শীতের সময়টা তাই সতর্ক থাকতে হবে জঙ্গল লাগোয়া জনপদ ও বসতবাড়ির অধিবাসীদের।
সব সময় চারপাশ দেখে যাচাই করে চলাফেরা করতে হবে এই ঠান্ডার সময়কালে। বিশেষ করে দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলার নদী ও জঙ্গল ঘেষা ব্লকগুলিকে এ ব্যাপারে সতর্ক থাকতে বলছে বন বিভাগ।আসলে হালকা ঠান্ডার বাতাবরণ তৈরি হতেই কেউটে ও চন্দ্রবোড়ার দল গর্ত থেকে বাইরে বের হতে শুরু করেছে। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে বজবজে এমন একটা ঘটনা ঘটেছে।
বিশাল লম্বা বিষধর কেউটে দম্পতি জঙ্গলের ভিতর খোলা জায়গাতেই রোদ পোয়াচ্ছিল। আচমকা সেখানে চলে আসে একটি নেউল তথা বেজি। উভয় উভয়ের শত্রু। শুরু হয় মুখোমুখি লড়াই। ফোঁস ফাঁস শব্দ। এর ফাঁকে একটি কেউটে পালিয়ে কাছের একটি আঁশফল গাছের উপর উঠে আশ্রয় নেয়। অন্য কেউটের সঙ্গে তখন বেজির সংঘাত চলছে।
বজবজ থানার পান্না হীরালাল সংলগ্ন জঙ্গলে ঘেরা একটি বাড়ির পিছনে এই ঘটনা অনেকেই দেখেছে। খবর দেওয়া হয় পুলিস ও ডায়মন্ডহারবার হারবার উস্তি রেঞ্জ এর মহেশতলা বিট অফিসকে। বিট অফিস থেকে ঘটনাস্হলে যান বনকর্মীরা। ততক্ষণে বিবদমান কেউটে ও নেউল সেখান থেকে উধাও। গাছে আশ্রয় নেওয়া কেউটে টি রয়ে গিয়েছে।
বন কর্মীরা গাছের গায়ে সিঁড়ি লাগিয়ে লোহার ক্যাচার দিয়ে পাঁচ ফুট লম্বা কেউটেকে ধরে ফেলে। রেঞ্জ অফিসার দেবাশিস পাল বলেন, সাপটিকে আপাতত সল্টলেক ডিয়ার পার্কে জমা দেওয়ার জন্য পাঠানো হয়েছে। পরে সুন্দরবনে ছেড়ে দেওয়া হবে। তিনি বলেন, তিনদিন আগে বজবজ এর বুঁইতা থেকে একই ধরণের কেউটে পাওয়া গিয়েছিল।
এই তলাটে চন্দ্রবোড়া ও এই সময় পাওয়া যাচ্ছে। কেন এই সময় এই বিষধরেরা গর্ত ছেড়ে বাইরে চলে আসছে তার কারণ তিনি ব্যাখ্যা করেন। তিনি বলেন, কেউটে ও চন্দ্রবোড়া র রক্ত খুব ঠান্ডা। শীতের সময় তাই গর্তে ঠান্ডা জায়গাতে তাই থাকতে পারে না।
রক্ত কে গরম করার জন্য রোদে গা সেকতে আসে ওরা। তাতে রক্ত গরম হয়। তখন চাঙা হয় ওরা। এই কারণে এই শীতের সময় দক্ষিণের বিভিন্ন জাায়গাতে ই কেউটে ও চন্দ্রবোড়া বেশি দেখা যায়। এই কারণেই সকলকে সতর্ক থাকতে বলা হচ্ছে।