আদালত সম্পর্কে মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করলেন বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য-সহ বেশ কয়েকজন আইনজীবী। সোমবার এসএসসি মামলার রায় ঘোষণার পর আদালতের নির্দেশ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে কিছু মন্তব্য করেছিলেন মমতা।
তৃণমূল প্রার্থীর সমর্থনে বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত বর্ধমানের গলসির জনসভায় বিজেপি সম্পর্কে মমতা বলেন, ‘‘এরা কোর্ট কিনে নিয়েছে, আমি সুপ্রিম কোর্টের কথা বলছি না। সিবিআই-কে কিনে নিয়েছে, বিএসএফ-কে কিনে নিয়েছে!’’ তবে এই সূত্রেই তিনি জানান, বিচারপতিদের সম্পর্কে কিছু বলছেন না।
মমতার ওই মন্তব্যেই আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বৃহস্পতিবার বিকাশ আদালতে বলেন, ‘‘অপরাধমূলক মন্তব্য করা হচ্ছে। পদক্ষেপ করা না হলে সবাই আদালতকে দেখে হাসাহাসি করবে।’’ একই সঙ্গে তিনি সওয়াল করেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী বলছেন, আদালত বিক্রি হয়ে গিয়েছে। বিচারপতির রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে। বিচারপতিরা নিজের বিচারবুদ্ধি দিয়ে কাজ করেন।
কিন্তু গোটা হাইকোর্ট বিক্রি হয়ে গিয়েছে, এমন মন্তব্য কেন? এতে আদালতের সম্মানহানি হচ্ছে।’’প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম ও বিচারপতি হিরন্ময় ভট্টাচার্যের বেঞ্চের দৃষ্টি আকর্ষণ করে আইনজীবীরা আবেদন করেন স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এই মন্তব্যের বিরুদ্ধে মামলা করুক কলকাতা হাইকোর্ট। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত পদক্ষেপের আবেদন গ্রহণ করে কলকাতা হাইকোর্ট।
তবে পদক্ষেপ করার বিষয়টি পত্রিকাটি মুদ্রণে যাওয়া পর্যন্ত স্পষ্ট করেনি আদালত।এদিন দুপুর ২টো থেকে সেই মামলার শুনানি হয় কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানমের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে। মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে এই একই বিষয়ে মোট পাঁচটি আবেদন জমা পড়েছিল হাইকোর্টে। প্রধান বিচারপতি শুনানির পর বলেন,
‘‘পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্যের প্রেক্ষিতে স্বতঃপ্রণোদিত পদক্ষেপ হবে কি না, তা বিবেচনাধীন রাখা হচ্ছে। তবে আবেদনটি গ্রহণ করা হল।’’ একই সঙ্গে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ জানিয়েছে, আদালত নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য বিষয়ে পদক্ষেপ করা হবে কি না, তা ঠিক করবে একটি বেঞ্চ। ফলে আপাতত ওই বেঞ্চের সিদ্ধান্তের উপরেই নির্ভর করছে এই মামলার ভবিষ্যৎ।