Wednesday, May 8, 2024
spot_img
Homeজেলাভবঘুরের শেষকৃত্য করল ক্যানিং থানার পুলিশ

ভবঘুরের শেষকৃত্য করল ক্যানিং থানার পুলিশ

বিশ্ব সমাচার, ক্যানিং: সালটা ২০২১। এক সহৃদয় ব্যক্তি এক অসুস্থ ভবঘুরেকে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করেন। দীর্ঘ তিন বছর ধরে ওই ভবঘুরে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। বুধবার শারীরিক অসুস্থতার কারণে তিনি মারা যান। তিন বছর হাসপাতালে পড়ে থাকলেও পরিবারের কেউ তাঁরর খোঁজখবর নেননি।

ভবঘুরের শেষকৃত্য করল ক্যানিং থানার পুলিশ

মারা যাওয়া পর তাঁরর দেহ কে সৎকার করবে, সেটাই ছিল বড় প্রশ্ন। কারণ রোগে ভুগে তাঁর স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। কোনও অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়নি। যে কারনে পুলিশ ওই দেহ নিতে পারে না। এমন অবস্থায় দীর্ঘক্ষণ ওই দেহ নিয়ে একটা টানাপড়েন চলতে থাকে। খবর পৌঁছয় ক্যানিং থানার আইসি সৌগত ঘোষের কাছে।

ভবঘুরের শেষকৃত্য করল ক্যানিং থানার পুলিশ

তিনি এই খবর জানতে পারেন তাঁর অফিসারের কাছ থেকে। সৌগতবাবু ভাবতে থাকেন, কীভাবে এই ব্যক্তির সৎকার করা যায়। তাঁর হৃদয় কেঁদে ওঠে, একটা মানুষের সৎকার হবে না! এরপর তিনি তার সহকর্মী এস আই শুভ্ঙকর সাহা ও শুভঙ্কর করন, মিলন সরকার, আরাফাত সরদারকে সঙ্গে নিয়ে পৌঁছে যান ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে।

ভবঘুরের শেষকৃত্য করল ক্যানিং থানার পুলিশ

ঘড়ির কাঁটা তখন রাত ১২টা ছুঁই ছুঁই। হাসপাতাল থেকে দেহটি বার করা হয়।সৌগতবাবু সিদ্ধান্ত নিলেন ওই ব্যক্তির সৎকার তাঁরাই করবেন। এরপর তিনি নির্দেশ দেন, যথাযথ সম্মান জানিয়ে ওই ব্যক্তির সৎকার করা হবে। এক দোকানদারকে ফোন করে ধুপ ও ফুলের ব্যবস্থা করলেন পুলিশকর্মীরা।

ভবঘুরের শেষকৃত্য করল ক্যানিং থানার পুলিশ

এরপর ওই ব্যক্তির মৃতদেহ নিয়ে তাঁরা রওনা দিলেন ক্যানিং বৈতরণী শ্মশানের দিকে। সামনে মৃতদেহের গাড়ি‌, তাঁর পিছনে ক্যানিং থানার আইসির গাড়ি। দেখে বোঝা মুশকিল যে ওই ভবঘুরের পরিবারে লোকজন কেউ নেই! ক্যানিং থানার পুলিশ কর্মীরা তাঁর শেষযাত্রার সঙ্গী।

ভবঘুরের শেষকৃত্য করল ক্যানিং থানার পুলিশ

এরপর যথাযথ সম্মান জানিয়ে ওই ভবঘুরে ব্যক্তির সৎকার সম্পূর্ণ হল। সৌগতবাবু নিজে পকেট থেকে টাকা বের করে ডোমদের দিলেন। আশেপাশে যাঁরা ছিলেন, তাঁদেরকে মিষ্টি বিতরণ করলেন। এই বিষয়ে সৌগতবাবু বলেন, মানুষের জীবনে শেষ পরিণতি মৃত্যু। প্রত্যেকেই চান, তাঁর মৃত্যুর পরে শেষকৃত্য যেন যথাযথ নিয়ম মেনেই করেন তাঁর পরিবারের লোকজন।

ভবঘুরের শেষকৃত্য করল ক্যানিং থানার পুলিশ

এই ভবঘুরের কেউ ছিল না সৎকার করার মতো। তাই আমি আমার সহকর্মীদের নিয়ে ওই মৃতব্যক্তির সৎকার করলাম ।আমরা প্রত্যেকেই মানুষ, মানুষের পাশে দাঁড়ানোই আমাদের কাজ।

Most Popular