সোমবার কলকাতা হাইকোর্ট ২০১৬ সালের এসএসসি পরীক্ষার প্যানেলের গ্রুপ সি, গ্রুপ ডি, নবম-দশম, একাদশ-দ্বাদশের গোটা প্যানেলই বাতিল করে দিয়েছে। কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি থাকাকালীন এসএসসির নিয়োগ দুর্নীতি চিহ্নিত করেছিলেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সিবিআই তদন্তের নির্দেশও দিয়েছিলেন। রাতারাতি হয়ে উঠেছিলেন চাকরিপ্রার্থীদের ‘মসিহা’।
রাজনীতিক হিসাবে জীবনের নতুন ইনিংস শুরু করেছেন। তমলুকের বিজেপি প্রার্থী তিনি।তবে তিনি এখন আর বিচারপতি নয়। রাজনীতিক হিসাবে জীবনের নতুন ইনিংস শুরু করেছেন। তমলুকের বিজেপি প্রার্থী তিনি। ভোটপ্রচারের ব্যস্ততার মাঝে রায় নিয়ে মুখ খুললেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগ দাবি করলেন তিনি।
অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “এই মামলা নিয়ে বেশ কিছুদিন কাজ করেছিলাম বিচারপতি হিসাবে। উপযুক্ত প্রার্থীদের বঞ্চিত করা হয়েছিল। ঠকানো হয়েছিল। তা বুঝতে পেরেছিলাম। ঠকিয়ে দেওয়া প্রার্থীদের মধ্যে হিন্দু, মুসলিম সকলে রয়েছেন।” অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “আরও কঠোর হয়েছে ডিভিশন বেঞ্চ। আমি যে কঠোরতা দেখাতে পারিনি, ডিভিশন বেঞ্চ তা দেখিয়েছে।
এটা আনন্দের, কিন্তু আজ আমরা সেই আনন্দ প্রকাশ করতে পারছি না। আদালতের আদেশ মেনে নিতে হবে। এটা আমার ব্যক্তিগত বিষয় ছিল না যে স্বস্তি বা অস্বস্তিবোধ করব। আমার খারাপ লাগা রয়েছে কারণ এতদিন যোগ্য প্রার্থীদের বঞ্চিত করা হয়েছে। যোগ্য প্রার্থীরা পুনর্মূল্যায়নের পর চাকরি পাবেন, আশা করব যে সরকারই ক্ষমতায় আসুক না কেন, সে রাজ্য সরকার একটা ব্যবস্থা করবে।”
রাজ্য সরকারকে নিশানা করে তিনি বলেন, “আমার হাতে একবার ধরা পড়েছে। এখন আবার ধরা পড়েছে।” এর পরই সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ঝাঁজালো আক্রমণ করেন। বলেন, “মিথ্যাচারী মুখ্যমন্ত্রী বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীদের ঠকিয়েছিলেন। সকলের উচিত তৃণমূলকে বয়কট করা। জোচ্চরদের ফাঁসিতে চড়ানো উচিত।”
তিনি আরও বলেন, “আমার খুব খারাপ লাগছে যে এমন মুখ্যমন্ত্রীর অধীনে রয়েছি। ওনার যদি লজ্জা থাকে, তবে এক্ষুণি ইস্তফা দেওয়া উচিত। রাষ্ট্রপতির শাসনে নির্বাচন হোক।” শাসক দলের নেতাদেরও দুর্নীতি নিয়ে আক্রমণ করেন প্রাক্তন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “এরা তো নিজেদের চারপাশে সুরক্ষা বলয় তৈরি করে রেখেছে ক্ষমতায় থেকে।
এদের যদি লজ্জা থাকে, সাহস থাকে, তবে ইস্তফা দিয়ে দেখাক। তারপরই দেখা যাবে কে ধরা পড়ে। আমায় তো আহ্বান করেছিল যে বিচারপ্রক্রিয়া ছেড়ে রাজনীতিতে আসুন। আমি তো এসেছি। তাদের টিকি দেখতে পাচ্ছি না কেন। এমন নয় যে তারা ক্ষমতায় থাকলে গ্রেফতার হবেন না। তবে সাহস থাকলে সুরক্ষা কবচ ছেড়ে বেরোক।
আমি পড়েছি, উনি (মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়) নাকি বলেছেন নেতারা আন্দোলন করতে গিয়ে গ্রেফতার হয়েছেন। কী আন্দোলন করছিলেন? স্বাধীনতা আন্দোলন করছিলেন? চাকরি বিক্রি করেছিলেন, কোটি কোটি টাকা বান্ধবীর বাড়িতে রেখেছিলেন। সেই জন্য গ্রেফতার হয়েছিলেন।”