স্টাফ রিপোর্টার : বিধানসভার অন্দরে নজিরবিহীন ঘটনা৷ হাতাহাতিতে জড়ালেন শাসক-বিরোধী দলের বিধায়করা৷তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক অসিত মজুমদারকে মেরে নাক ফাটিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে।উল্টোদিকে মার খেলেন বেশ কিছু বিজেপি বিধায়কও৷বিরোধী দলের মুখ্য সচেতক মনোজ টিগ্গার জামা ছিঁড়ে দেওয়ার অভিযোগ৷বগটুই কাণ্ড নিয়ে গত কয়েকদিন ধরেই রাজ্য-রাজনীতির পারদ চড়ছে৷ সেই আঁচ সোমবার এসে পড়ে বিধানসভাতেও৷
এদিন অধিবেশন বসলে সদনের অন্দরে বিরোধী দলের ভূমিকার সমালোচনা করেন অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়৷ বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর ভূমিকারও সমালোচনা করেন তিনি৷ এরপরেই আরও তেতে ওঠে বিরোধী বেঞ্চ৷ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন বিজেপি বিধায়কেরা৷সেক্রেটরিয়েটের কাগজ কেড়ে নিতে গেলে নিরাপত্তারক্ষীরা বাধা দেন৷ শুরু হয়ে যায় হাতাহাতি৷ এই অবস্থা দেখে চুপ করে বসে থাকেনি ট্রেজারি বেঞ্চও৷ শাসকদলের বিধায়করাও ওয়েলে নেমে আসেন৷ শুরু হয়ে যায় ‘ফাইটিং’৷ আহত হন দু’পক্ষের বেশ কয়েকজন বিধায়ক৷ গোটা ঘটনায় দু’পক্ষই একে অপরকে দোষারোপ করেছে৷
বিধানসভা থেকে ওয়াক আউট করেন বিজেপি বিধায়কেরা৷ শুভেন্দুর অভিযোগ, শাসকদলের বিধায়কদের হাত থেকে রেহাই পাননি দলের মহিলা বিধায়করাও৷ঘটনায় বিরোধী দলনেতা-সহ মনোজ টিগ্গা, দীপক বর্মা, নরহরি মাহাতো, শঙ্কর ঘোষকে সাসপেন্ড করা হয়।পাঁচ বিজেপি বিধায়ককে পরবর্তী বাজেট অধিবেশন পর্যন্ত সাসপেন্ড করেছেন বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়৷ সোমবার অধিবেশনের শুরুতেই ঘটে যাওয়া ঘটনা উত্তরবঙ্গ সফরে থাকা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানতে পারেন। খবর পাওয়া মাত্রই বিধানসভার পরিস্থিতি জানতে ফোন করেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে।
বেশ কিছুক্ষণ কথা হয় তাদের মধ্যে।মুখ্যমন্ত্রী মমতা জানতে চান ঘটনা প্রসঙ্গে। সূত্রের খবর, মমতা জানতে চেয়েছেন, দলের পক্ষে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী তথা বিরোধী দলের বিরুদ্ধে তৃণমূল পরিষদীয় দল কোনও ব্যবস্থা বা প্রস্তাব আনছেন কিনা।সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের জবাবে ফিরহাদ বলেছেন, ‘‘বিধানসভায় বিজেপি বিধায়করা যে ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়েছে তা মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়েছি। এমন ঘটনা পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার ইতিহাসে নজিরবিহীন। সেই ঘটনায় আহত বিধায়কদের খোঁজখবর নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।” বিজেপি পরিষদীয় দলের বিরুদ্ধে তৃণমূল পরিষদীয় দল যে প্রস্তাব আনতে চলছে, সে বিষয়ে নেত্রীর অনুমতি চান ফিরহাদ। ফোনেই তাঁকে নিজের সম্মতির কথা জানিয়ে দেন মমতা।