রবীন্দ্রনাথ সামন্ত, পাথরপ্রতিমা : মিষ্টি জলের খাল আছে। কিন্তু খালে এখন জল নেই। সেই কারণে কৃষকরা চিন্তিত হয়ে পড়েছেন, বোরো ধান চাষ রক্ষা করবেন কি করে! ফসলকে বাঁচাতে আরও দু মাস ধরে জল দিতে হবে ধান গাছের গোড়ায়। কিন্তু কি করে তা সম্ভব? এখন এই সমস্যার সম্মুখীন পাথরপ্রতিমার দুর্বাচটি গ্রাম পঞ্চায়েতের পশ্চিম সুরেন্দ্রনগর গ্রামের বিশালাক্ষী খাল সংলগ্ন বোরো চাষীরা।
স্থানীয় কৃষক এবং গ্রামবাসীরা অভিযোগ করেন, প্রায় ৩০ বছর আগে ননি মন্ডলের বাড়ি থেকে চাঁদ সিং- এর ঘাট পর্যন্ত দেড় কিমি লম্বা এবং একশো কুড়ি ফুট চওড়া বিশালাক্ষী খাল খনন করা হয়েছিল। অপরদিকে চাষবাসের জন্য প্রিয়ঘেরি টেকা থেকে ধীরেন দলপতির বাড়ি পর্যন্ত দেড় কিমি লম্বা এবং ৮০ ফুট চওড়া ওই খালের অপর একটি অংশ খনন করে মিষ্টি জলাধার তৈরি করা হয়েছিল। এর ফলে ওখানে প্রায় ৫০০ বিঘা জমিতে বোরো চাষ করা হত। গত বছর প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ফলে খালপাড় ভেঙে গিয়ে নোনা জল ঢুকে গিয়ে ছিল।
ফলে খালের কচুরিপানা মরে গিয়ে দুর্গন্ধ হয় এবং জল দূষিত হয়ে যায়। সে কারণে এলাকায় দুর্গন্ধের সাথে সাথে মশার প্রাদুর্ভাব দেখা যায় বলে অভিযোগ। এছাড়া ওই খাল পাথরপ্রতিমা পঞ্চায়েত সমিতি প্রতিবছর মাছ চাষের জন্য লিজ দিয়ে দেন লিজ হোল্ডারকে। স্থানীয় কৃষকদের অভিযোগ, পঞ্চায়েত সমিতি লীজ দিয়ে এখান থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা উপার্জন করছে, অথচ মজে যাওয়া খাল খনন করা হচ্ছে না বা খাল পাড়ে মাটি দিচ্ছে না। বিষয়টি প্রশাসনের বিভিন্ন মহলে জানানো হয়েছে কিন্তু কোন সুফল মেলেনি বলে কৃষকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়।
তবে এখন খালে জল না থাকার কারণে ধান গাছে কিভাবে জল দেওয়া হবে, সেই চিন্তায় রয়েছেন বিশালক্ষী খাল সংলগ্ন বোরো চাষিরা। যদিও এবিষয়ে পাথরপ্রতিমা বিধানসভার বিধায়ক এবং সুন্দরবন উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান সমীর কুমার জানা জানান, ওই খালের জমি নিয়ে আইনি জটিলতা রয়েছে। সেই কারণে পাথরপ্রতিমা পঞ্চায়েত সমিতির উদ্যোগ থাকলেও, জমি জটের জন্য বিশালাক্ষী খাল খনন করা যায়নি বলে, বিধায়ক বলেন।