বান্টি মুখার্জি, বাসন্তী: প্রত্যন্ত সুন্দরবনের বাসন্তী ব্লকের ফুলমালঞ্চ গ্রাম পঞ্চায়েতের কুলতলি গ্রামে বসবাস করে ৪০-৫০টি তপসিলি উপজাতি পরিবারের মানুষজন। নুন আনতে পান্তা ফুরানো এই উপজাতি পরিবারের সদস্যরা নদীতে মাছ-কাঁকড়া ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন। অনেকেই আবার হাঁড়িয়ার ব্যবসা এবং দিনমজুরের কাজ করেন।
রুটিরুজির টানে অনেক পরিবারের সদস্যরা মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু, কর্ণাটক, আন্দামান, মুম্বই, বিহারের মতো ভিনরাজ্যে কাজ করতে যান জীবন জীবিকা নির্বাহের জন্য। বছর ত্রিশ আগে এই গ্রামেই কালাজ্বরে আক্রান্ত হয়ে বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছে। সেই সময় অত্যন্ত অসহায় পরিবারগুলিকে সুস্থভাবে বাঁচিয়ে রাখার জন্য এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা কুড়ি পয়সার আকৃতির ঘর তৈরি করে দেয়।
পরিস্থিতির সাথে সাথে সমস্ত কিছুরই পরিবর্তন হলেও পরিবর্তন আসেনি সুন্দরবনের বাসন্তী ব্লকের কুলতলি গ্রামের আদিবাসী মানুষদের। বিমল, নির্মল, মেনকা, নেপাল, সুমিত্রা, প্রদীপ, গীতা, মমতা সরদারের দাবি, বিগত প্রায় ত্রিশ বছরের অধিক সময় তাঁরা সরকারি পরিষেবা থেকে বঞ্চিত।
বিভিন্ন সময় প্রাকৃতিক দুর্যোগের পূর্বাভাস জানতে পারলে স্কুল, কলেজ কিংবা কোনও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার ছাদের তলায় আশ্রয় নিতে হয়। এমনকী জাতিগত শংসাপত্র পেতে গেলেও হয়রানির শিকার হতে হয় বছরের পর বছর।তাঁদের দাবি, যে কোনও নির্বাচনের সময় এই পাড়াতেই রাজনৈতিক দাদা-দিদিদের আনাগোনা বাড়ে। নির্বাচন মিটে গেলে কেউ খোঁজখবর রাখেন না।
কুলতলির এই সমস্ত আদিবাসী পরিবারগুলি চায় সামান্য একটু মাথা গোঁজার স্থায়ী আশ্রয়স্থল। বর্তমানে আবাস যোজনায় উপভোক্তাদের জন্য বাড়ি বাড়ি সরকারি কর্মীরা সার্ভে করছেন। কুলতলির মানুষজন চাতকের মতো অপেক্ষা করে রয়েছেন, যদি এবার তাঁদের ভাগ্যে শিকে ছেঁড়ে! না হলে হয়তো আবারও সেই তিমিরেই থেকে যেতে হবে।