লাইন আছে। ট্রেনও আছে। শুধু চালক নেই। শুনতে অবাক লাগলেও এটাই বাস্তব হতে চলেছে। চালকহীন মেট্রো এবার পেতে চলেছে মহানগরী কলকাতা। অত্যাধুনিক এই প্রযুক্তিকে বলা হচ্ছে, অটোমেটিক ট্রেন অপারেশন। এই পদ্ধতির মাধ্যমে কোনও মোটরম্যান বা চালক ছাড়াই ছুটবে মেট্রো। যে রুটে এই অটোমেটিক মেট্রো চলবে সেখানের সিগন্যালিং ব্যবস্থা পরিচালিত হবে কমিউনিকেশন বেসড ট্রেন কন্ট্রোল (সিবিটিসি) সিস্টেমের মাধ্যমে।
সূত্রের খবর, শিয়ালদা থেকে সল্টলেক (ইস্ট–ওয়েস্ট) পর্যন্ত এবং হাওড়া ময়দান থেকে সল্টলেক পর্যন্ত ইতিমধ্যেই চালকহীন মেট্রো রেকের সফল ট্রায়াল রান শেষ হয়েছে।শুক্রবার কলকাতা মেট্রোর জেনারেল ম্যানেজার পি উদয়কুমার রেড্ডি প্রযুক্তি নির্ভর এই মেট্রো চলাচল ব্যবস্থা খতিয়ে দেখেন।
অন্যদিকে মেট্রো সূত্রে খবর, অটোমেটিক ট্রেন অপারেশন (এটিও) প্রযুক্তির সাহায্যে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হতে চলেছে। সেক্ষেত্রে কোনও মোটরম্যান বা চালক ছাড়াই একপ্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ছুটবে মেট্রো রেল। ভবিষ্যতে নিউ গড়িয়া–এয়ারপোর্ট এবং জোকা মেট্রো রুটেও চালকবিহীন পরিষেবা চালু হবে।
উন্নততর সিগন্যালিং সিস্টেম রয়েছে ইস্ট–ওয়েস্ট মেট্রো রুটে। তাই এই রুটে উন্নত প্রযুক্তিতে চালকহীন মেট্রো চালানো সম্ভব হবে। চালক–সহ মেট্রোতে ‘হিউম্যান এরর’ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তবে এক্ষেত্রে সেই সম্ভাবমা নেই। বিশেষ করে পাবলিক অ্যাড্রেস সিস্টেম মেট্রোর অভ্যন্তরে। দরজা খোলা বন্ধ করার জটিলতাও কেটে যাবে।
এছাড়া ৯০ সেকেন্ড অন্তর মেট্রো চালাতে সক্ষম এই রুট। যাত্রী ছাড়া বিনা চালকের রেক চালিয়ে মহড়া সফল হয়েছে। কবি সুভাষ থেকে দক্ষিণেশ্বর রুটে চালকের ভুলে ঝুঁকিপূর্ণ যাত্রার সাক্ষী হয়েছেন যাত্রীরা। অর্থাৎ হিউম্যান এরর হয়। ভুল করে চালক ডান–দিকের বদলে বাঁ–দিকের বোতামে হাত দিয়ে ফেলেন।
তখন আচমকাই প্ল্যাটফর্মের উল্টোদিকে মেট্রোর দরজা খুলে যায়। দরজা খোলা রেখেই মেট্রো এক স্টেশন থেকে অন্য স্টেশনে পৌঁছে যাওয়ার সাক্ষী থেকেছেন যাত্রীরা। কিন্তু চালকবিহীন রেকগুলি যন্ত্রের সাহায্যে পরিচালিত হবে। ফলে এড়ানো যাবে হিউম্যান এরর।
আর দুর্ঘটনার আশঙ্কা তলানিতে চলে যাবে।দিল্লির পর এখন রাজধানীর পিঙ্ক ও ম্যাজেন্টা লাইনে চালকবিহীন মেট্রো পরিষেবা রয়েছে। তারপরই দেশের দ্বিতীয় জায়গা হিসেবে উঠে আসতে চলেছে ইস্ট–ওয়েস্ট মেট্রো রুট।