বান্টি মুখার্জি, সুন্দরবন: আবহাওয়া দফতরের সতর্কবার্তা অনুযায়ী আগামী ২৫ অক্টোবর ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়তে পারে। যার নাম সিতরাং। এর গতি ঘণ্টায় ৯০-১০০ কিমি হতে পারে। ইতিমধ্যে আবহাওয়া দফতর থেকে জানানো হয়েছে, উত্তর আন্দামান সাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় একটি নিম্নচাপ সৃষ্টি এবং সেটির ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার প্রবল সম্ভবনা রয়েছে।
আছড়ে পড়তে পারে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার উপকূলবর্তী এলাকায়। সেই কারণে ইতিমধ্যেই এ নিয়ে চরম সতর্কতা জারি হয়েছে সুন্দরবনজুড়ে। একদিকে যেমন মাইকিং করা হচ্ছে উপকূলবর্তী এলাকাগুলিতে, তেমনই সুন্দরবনের নদী খাঁড়িতে মাছ ধরতে যাওয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে প্রশাসন। আর ঘূর্ণিঝড় হলে সেই পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন প্রস্তুত রয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
সিতরাং-এর প্রভাবে যাতে মৎস্যজীবীরা বিপদে না পড়েন, সেই কারণে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার মৎস্যজীবীদের গভীর সমুদ্রে যাওয়ার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে মৎস্য দফতর। এই নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে কেউ গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে গেলে তাঁর লাইসেন্স বাতিল করা হতে পারে বলে মৎস্য দফতরের তরফ থেকে জানানো হয়েছে। পাশাপাশি নদী তীরবর্তী মানুষজনকে সরে আসার জন্যও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ইতিমধ্যেই বিভিন্ন উপকূল এলাকা ঝড়খালি, গোসাবা, বাসন্তী সহ দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিভিন্ন জায়গায় পুলিশের তরফ থেকে মাইকিংয়ের মাধ্যমে সতর্ক করা হয়েছে এলাকার মানুষজনকে। ঝড়খালি কোস্টাল থানার আধিকারিক প্রদীপ রায়ের নেতৃত্বে ইতিমধ্যে মাইকিং করে সতর্ক করা হচ্ছে ঝড়খালির বিভিন্ন এলাকায়।
ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলার জন্য কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে প্রতিটি ব্লক ও মহকুমা স্তরে। সেখান থেকেই এই ঝড়ের গতি প্রকৃতি এবং সমগ্র এলাকার উপর নজরদারি রাখছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন।আয়লা, ফণি, বুলবুল, আম্পান কিংবা ইয়াসের স্মৃতি এখনো টাটকা।
১৩ বছর আগে আয়লা হলেও সিতরাং আতঙ্ক যেন সেই স্মৃতিকেই খানিকটা উস্কে দিল বলে মনে করছেন সুন্দরবনবাসী। আয়লা, আম্ফান ও ইয়াসে প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল সুন্দরবনে। গবাদি পশু থেকে শুরু করে বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। ক্ষতি হয়েছিল প্রচুর ফসলের। বহু ভুটভুটি, লঞ্চ জলোচ্ছ্বাসে ডুবে গিয়েছিল।
সেই কারণেই এবার যথেষ্ট সতর্ক প্রশাসন। এই ঘূর্ণিঝড়ের কারণে সুন্দরবনে পর্যটকদের সুন্দরবনে যাওয়া আসার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই সমস্ত লঞ্চকে কিনারায় উঠে আসার জন্য বলা হয়েছে। আগামী কয়েকদিন এই সমস্ত জলযানের অনুমতি দেওয়া বন দফতরের তরফ থেকে বন্ধ রাখা হয়েছে।