ঝুলে রইল চাকরিহারা শিক্ষাকর্মীদের ভাগ্য। চাকরি বাতিলের রায়ে স্থগিতাদেশ দিল না সুপ্রিম কোর্ট। কলকাতা হাইকোর্টের রায়ে এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতিতে চাকরি গিয়েছে বাংলার ২৫ হাজার ৭৫৩ জনের।হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল এসএসসি, মধ্যশিক্ষা পর্ষদ এবং চাকরিহারাদের একাংশ।
সোমবার মামলাটির শুনানি হয় প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রের বেঞ্চে।এদিন সুপ্রিম কোর্টে কড়া প্রশ্নের মুখে পড়ে এসএসসি। মামলার শুনানিতে রাজ্যের আইনজীবী রাকেশ দ্বিবেদী আদালতে বলেন, হাই কোর্ট এমন নির্দেশ দিয়েছে, যা কার্যকর করা সম্ভব নয়।
মানবিকতার কারণে ক্যানসার আক্রান্ত এক জনকে চাকরি দিয়ে বাকি সকলের চাকরি বাতিল করা হয়েছে। পুরো মন্ত্রিসভার বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। ভোটের সময় পুরো মন্ত্রিসভার সদস্যদের তো জেলে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। জবাবে প্রধান বিচারপতি বলেন, প্যানেলে নাম নেই, এমন ব্যক্তিদের নিয়োগ করা হয়েছে।
এটা তো সম্পূর্ণ জালিয়াতি। তাঁর প্রশ্ন, মন্ত্রিসভা যখন জেনেছিল যে, বেআইনি নিয়োগ হয়েছে, তার পরেও কেন তারা সুপার নিউমেরিক পোস্ট (বাড়তি) তৈরি করতে গেল? জানা গিয়েছে, যোগ্য-অযোগ্যদের আলাদা করতে তারা প্রস্তুত বলে সুপ্রিম কোর্টে জানিয়েছে স্কুল সার্ভিস কমিশন।তবে প্রধান বিচারপতির প্রশ্ন, ওএমআর শিটই যেখানে নেই, সেখানে কী ভাবে যোগ্য এবং অযোগ্যদের বাছাই করা হবে?
রাজ্যের উদ্দেশে প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়ের মন্তব্য, ‘‘আপনারা চাকরি বাতিলের বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন? অথচ কোনও আসল ওএমআর শিটই নেই। কোন তথ্যের ভিত্তিতে যোগ্য এবং অযোগ্যদের বাছাই করছেন? ২৫ হাজার কিন্তু বিশাল সংখ্যা।’’ ওএমআর শিট নষ্ট হয়ে যাওয়া, মিরর ইমেজ না থাকা, প্যানেলের বাইরে নিয়োগ— এ সব কী করে ঘটল, তা রাজ্যের কাছে জানতে চেয়েছেন প্রধান বিচারপতি
।প্রধান বিচারপতি জানান, পুরো বিষয়টিই তাঁরা শুনবেন। তবে মন্ত্রিসভার বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তের যে নির্দেশ উচ্চ আদালত দিয়েছিল, তাতে স্থগিতাদেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালতে চাকরিহারাদের আইনজীবী মুকুল রোহতগি চাকরি বাতিলের নির্দেশেও স্থগিতাদেশের আবেদন করেন। তিনি বলেন, ‘‘চাকরি বাতিল নিয়েও অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দেওয়া হোক।
ইতিমধ্যে ভোটের কাজে অনেকে চলে গিয়েছেন। এই অবস্থায় ফিরে আসা সম্ভব নয়।’’ কিন্তু প্রধান বিচারপতি তাতে স্থগিতাদেশ দেননি। তিনি বলেন, ‘‘আমরা শুধু মন্ত্রিসভা নিয়ে নির্দেশ দিচ্ছি। মন্ত্রিসভার বিরুদ্ধে এখনই কোনও কড়া পদক্ষেপ করতে পারবে না সিবিআই।’’ সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী সোমবার।