Monday, April 29, 2024
spot_img
Homeরাজ্যরামনবমী বন্ধ করার ষড়যন্ত্র করেছিল তৃণমূল, দাবি মোদীর

রামনবমী বন্ধ করার ষড়যন্ত্র করেছিল তৃণমূল, দাবি মোদীর

রামনবমীর দিন ‘সংঘর্ষের দিন’ বলে আগেও কটাক্ষ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।এবার বাংলায় এসে তার জবাব দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মঙ্গলবার বালুরঘাটের প্রার্থী সুকান্ত মজুমদারের প্রচারে আসেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেন, ‘‘রামনবমী আটকানোর সমস্ত রকমের ষড়যন্ত্র করেছে তৃণমূল। রামনবমী গুরুত্বপূর্ণ, নববর্ষও গুরুত্বপূর্ণ আর নবরাত্রিও গুরুত্বপূর্ণ। এই প্রথম রামনবমী যেখানে অযোধ্যায় রামলালা বিরাজমান। আমি জানি, তৃণমূল প্রত্যেকবারের মতো এখানে রামনবমী আটকানোর জন্য সব ষড়যন্ত্র করেছে, কিন্তু জয় সত্যেরই হয়েছে। এই কারণে আদালতের থেকে অনুমতি মিলেছে। কাল রামনবমীর শোভাযাত্রা বের হবে।’’ আগামী ৪ জুন কী হবে লোকসভা ভোটে বিজেপির ফল তা নিয়েও ভবিষ্যৎবাণী করেন মোদি। তাঁর কথায়, “৪ জুন ৪০০ পার। মোদির গ্যারান্টি হল গ্যারান্টি পূরণ হওয়ার গ্যারান্টি।’’ প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, “বালুরঘাট বিমানবন্দরের জন্য বিজেপি অনেক চেষ্টা করেছে কিন্তু এখানকার তৃণমূল সরকারের ইচ্ছেই নেই বালুরঘাটে এয়ারপোর্ট তৈরি হোক। গত ১০ বছরে বাংলায় তৃণমূলের প্রবল বাধা সত্বেও উন্নয়নে বাংলার পাশে থেকেছে কেন্দ্র।’’ মোদী বলেন, ‘‘জনজাতি কার্ড নিয়ে ক্ষুব্ধ তৃণমূল। ওরা ভাবছে সব সুবিধা দিচ্ছে মোদী। সব ঘরে পৌঁছচ্ছে জল। জনজাতি গৌরব দিবস পালন করছে বিজেপি। জনজাতি বাচ্চাদের জন্য স্কুল খুলেছে। এই বিজেপিই দ্রৌপদী মুর্মুকে প্রথম জনজাতি মহিলা রাষ্ট্রপতি করেছে। কিন্তু তৃণমূল জনজাতিদের বেঁধে রাখতে চাইছে। এই বালুরঘাটে তিন মহিলা বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। তৃণমূলের লোক এসে আটকে দেয়। হেনস্থা করে। এই নির্বাচন ওদের বুঝিয়ে দেবে, বাবাসাহেব অম্বেডকরের লোকতন্ত্রে দলিত, বঞ্চিত জনজাতি তৃণমূলের দাস নয়, হবেও না। জনজাতি মহিলাদের অপদস্থ করা তৃণমূল নিজেই তার শিকার হবে।’’ মোদী আরও বলেন, ‘‘বালুরঘাটে জনজাতির সংখ্যা বেশি। বাম এবং তৃণমূল সরকার ইচ্ছা করে বালুরঘাটকে উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত করেছে। চিকিৎসার জন্য ভাল হাসপাতাল করতে দেয়নি। যুবকদের জন্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাও করতে দেয়নি। এখানকার যুবকদের অন্য রাজ্যে কাজের জন্য যেতে হচ্ছে। গত ১০ বছরে তৃণমূলের অনেক বাধা সত্ত্বেও বিজেপি বালুরঘাট এবং বাংলার বিকাশের জন্য সব রকম চেষ্টা করেছে।’’ মোদী জানান, “তৃণমূল তোলাবাজ, ভ্রষ্টাচারীর আড্ডা। বিজেপি কর্মীদের হত্যা করা হয় রাজ্যে। বালুরঘাটে বুথ সভাপতিকে হত্যা করা হয়েছে। সন্দেশখালিতে মহিলাদের উপর যে অত্যাচার হয়েছে, সারা দেশ দেখেছে। তৃণমূল কী ভাবে সন্দেশখালিতে অপরাধীদের বাঁচানোর চেষ্টা করেছে, তা-ও দেখেছে দেশ। মোদীর আরও খোঁচা, প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগেও এ রাজ্যে দুর্নীতি হয়েছে।তৃণমূল নেতাদের বাড়ি থেকে কোটি কোটি টাকা উদ্ধার হয়। কেন্দ্রীয় বাহিনী নিজেদের কাজে গেলে, দুর্নীতিগ্রস্তদের ধরতে গেলে, বাধা দেওয়া হয়। সিএএর বিরোধিতা করছে ওরা, যা আইনি ভাবে নাগরিকত্ব দিচ্ছে শরণার্থীদের। তৃণমূলকে সাজা দিন পদ্ম বোতাম টিপে।” প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাস, সৌরবিদ্যুতের ব্যবস্থা করবে বিজেপি। বিদ্যুতের বিল হবে শূন্য। আগামী পাঁচ বছর বিনামূল্য রেশন দেবে বিজেপি। বাংলায় মেয়েদের আইটি, শিক্ষা, পর্যটনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। বাড়ি, সিলিন্ডারের সুবিধা পাবেন দেশের সব মানুষ। এতে মঙ্গল হবে আদিবাসী মহিলাদের। বালুরঘাটে কী কী ট্রেন পরিষেবা দেওয়া হয়েছে, সে কথা স্মরণ করান মোদী। তিনি বলেন, বালুরঘাট স্টেশনকে ‘অমৃত ভারত’ স্টেশন হিসাবে বিকশিত করার চেষ্টা করা হয়েছে। বালুরঘাট-শিয়ালদহের মধ্যে নতুন ট্রেন চালু করা হয়েছে। তাঁর কটাক্ষ, তৃণমূল একটা বিমানবন্দরও এখানে করতে পারেনি। কোনও চেষ্টাই নেই। তিনি জানান, তৃণমূল যত বাধাই দিক, আগামী পাঁচ বছরে বালুরঘাটে উন্নয়ন করবে বিজেপি। এটা ‘মোদীর গ্যারান্টি’। তিনি আরও আশ্বাস দিয়ে বলেন, বন্দে ভারতের মতো ট্রেনও চলবে বালুরঘাটে। হবে জাতীয় সড়ক। বালুরঘাটের মানুষের স্বপ্নই তাঁর স্বপ্ন। তিনি বলেন, ‘‘আপনার স্বপ্নই আমার সঙ্কল্প। আমার প্রত্যেক মুহূর্ত দেশের নামে। ২৪ ঘণ্টা, সাত দিন ধরে ২০৪৭ সাল পর্যন্ত মোদী আপনার জন্য।’’ এদিন বালুরঘাটের পাশাপাশি রায়গঞ্জেও সভা করেন প্রধানমন্ত্রী। এই সভা থেকে তিনি বলেন, “বাংলায় কীসের অনুমতি পাওয়া যাবে, কীসের পাওয়া যাবে না। সেটা তৃণমূলের তোলাবাজরা ঠিক করে, প্রশাসন ঠিক করে না। এখানে রামনবমীর শোভাযাত্রা করার অনুমতি পাওয়া যায় না। কিন্তু যারা রামনবমী আর দুর্গাপূজার শোভাযাত্রায় পাথর ছোঁড়ে, তাঁদের পাথর ছোঁড়ার অনুমতি আছে।আজ বাংলার যে সব ভাইবোন বিভাজনের শিকার, দেশভাগের শিকার, তাঁদের তৃণমূল নাগরিকত্ব দেওয়ার বিরোধিতা করে তৃণমূল। অথচ, বাংলাদেশি-রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশকারীদের ঢুকিয়ে বাংলার জনবিন্যাস এবং আইনশৃঙ্খলা নষ্ট করার অনুমতি দিয়ে রেখেছে। এরা নিজেদের ভোটব্যাঙ্ক বাড়ানোর জন্য বাংলার ভবিষ্যৎ নষ্ট করে দিচ্ছে।”

Most Popular