অমিত মণ্ডল, গঙ্গাসাগর: ওই যে কথায় বলে, সব তীর্থ বারবার, গঙ্গাসাগর একবার। কিন্তু এই সময়টা গঙ্গাসাগরে মনে হবে গঙ্গাসাগর বার বার। পুণ্যার্থীদের ভিড়ে সরগরম এই মুহূর্তে যেন তীর্থক্ষেত্র সাগর। সন্ধ্যায় গঙ্গারতি বাড়তি আকর্ষণ পুণ্যার্থীদের কাছে।যেদিকে চোখ যায়, শুধু মাথার ভিড়। পুণ্যার্থীদের আগমনে জমে উঠেছে তীর্থক্ষেত্র গঙ্গাসাগর।
কপিল মুনির আশ্রমকে কেন্দ্র করে সেজে উঠেছে গোটা মেলা প্রাঙ্গণ। গঙ্গানদী ও বঙ্গোপসাগরের মিলনক্ষেত্রই গঙ্গাসাগর। একদিকে যেমন তীর্থভূমি, অন্যদিকে মেলাভূমি। দুইয়ের মেলবন্ধনে গঙ্গাসাগর মেলা।শুধু এ রাজ্যেই নয়, বাংলার পাশাপাশি প্রতিবছর ভিন রাজ্য থেকেও লক্ষাধিক পুণ্যার্থী এই সময় মোক্ষ লাভের আশায় ছুটে আসেন গঙ্গাসাগরে। ১০ জানুয়ারি থেকে মেলা শুরু হলেও মকর সংক্রান্তির পুণ্যস্নানের অপেক্ষায় সারাবছর দিন গোনেন তাঁরা।
এবার ১৫ জানুয়ারি ২টো ৫৩ মিনিটে মকর সংক্রান্তি। ১৪ জানুয়ারির সন্ধ্যে ৬টা ৫৩ মিনিট থেকে পুণ্যস্নান শুরু। চলবে ১৫ জনুয়ারি সন্ধ্যা ৬টা ৫৩ মিনিট পর্যন্ত।লাখো মানুষের ভিড়। তাই সাফল্যের সঙ্গে সাগর মেলা সম্পূর্ণ করতে তৎপর প্রশাসন। মেলা প্রাঙ্গণে কমপক্ষে ১১৫৯টি সিসি ক্যামেরায় নজরদারি চলছে। ২০টি ড্রোনের মাধ্যমে আকাশপথেও নজরদারি চলছে। নবান্নেও পৌঁছে যাচ্ছে মেলার সব লাইভ ছবি।
পুণ্যার্থীদের সাহায্যে রয়েছে কয়েক হাজার ভলান্টিয়ার। মেলায় চারটি ওয়াটার অ্যাম্বুল্যান্স ও ১০০টি অ্যাম্বুল্যান্স রয়েছে পুণ্যার্থীদের পরিষেবা দেওয়ার জন্য। সাগরে ১০টি দমকল কেন্দ্র এবং ২৫টি দমকলের ইঞ্জিন মোতায়েন করা হয়েছে।
গত কয়েক বছর করোনার সংক্রমণে থমকে গিয়েছিল জীবনযাত্রা। এবার সেই ভয় অনেকটাই কমেছে। একই সঙ্গে এবার কুম্ভমেলা না থাকায় গঙ্গাসাগরে রেকর্ড সংখ্যক ভিড় হবে বলে অনুমান রাজ্য এবং জেলা প্রশাসনের। আর এত সংখ্যক পুণ্যার্থীদের জন্য ঢেলে সাজানো হয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
পুণ্যার্থীদের যাতায়াতে কমপক্ষে ২২৫০টি সরকারি বাস, ৫০০টি বেসরকারি বাস রয়েছে। পুণ্যার্থীদের জন্য ৩২টি ভেসেল এবং ১০০টি লঞ্চ। নিরাপত্তার জন্য রয়েছে জিপিএস ট্র্যাকিং। সাগরে ১০টি পার্কিং জোন রয়েছে।
পুণ্যার্থীদের ভিড়ে রঙিন পুণ্যভূমি গঙ্গাসাগর। শোভাযাত্রা এবং নানান অনুষ্ঠানের পাশাপাশি গঙ্গারতি পুণ্যার্থীদের কাছে বাড়তি পাওনা।