বান্টি মুখার্জি, ক্যানিং: মঙ্গলবার বিকালে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে প্রত্যন্ত সুন্দরবনের বাসন্তী ব্লকের প্রান্তিক কাঁঠালবেড়িয়া গ্রামে দেবী দশভূজার ৫১ মূর্তির উদ্বোধন হল। ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী এদিন সুন্দরবনের এই প্রান্তিক গ্রামের দুর্গাপুজোর উদ্বোধন করায় খুশি এলাকার মানুষজন।স্থানীয় পঞ্চানন সেবা মিলন মন্দির ও গ্রামবাসীদের উদ্যোগে এই দুর্গাপুজো এবার ২৯ তম বর্ষে পদার্পণ করছে।
এবারের আকর্ষণ দেবীর ৫১ রূপের মূর্তি। দেবী ভূবনেশ্বরী, দেবী ধরিত্রী, দেবী কমলা, দেবী কুষ্মান্ডা, দেবী উগ্রচণ্ডা, দেবী ভদ্রকালী, দেবী অর্ধনারীশ্বর, দেবী কুন্তলা, দেবী কোটরী, দেবী ব্রহ্মচারিণী, দেবী ধূমাবতী সহ ৫১ মূর্তি বিরাজমান সুন্দরবনের মাতলা নদীর তীরবর্তী কাঁঠালবেড়িয়া গ্রামে। প্রতিমা শিল্পী শুভাশিস মণ্ডলের হাতের জাদুতে অনন্য রূপ ফুটে উঠেছে।
কেন এই ৫১ দুর্গার আয়োজন? পুজো কমিটির সভাপতি শ্রীবাস সরদার জানিয়েছেন, কাঁঠালবেড়িয়া গ্রামের বাসুদেব মিদ্দে, বিষ্ণুপদ নস্কর, দিলীপ মণ্ডল, দীনবন্ধু তরফদার, সমীর মণ্ডল, দিলীপ নস্কর, ধনঞ্জয় মণ্ডল বছরচারেক আগে দুর্গাপুজোর সময় প্রত্যন্ত সুন্দরবনের রাণীগড় গ্রামে গিয়েছিলেন প্রতিমা দর্শনে।
সেখানে দেবীর একান্ন মূর্তি পূজিত হয়েছিল।দেখে অভিভূত হয়েছিলেন তাঁর্। গ্রামে ফিরে তাঁরা সেই কথা মোড়ল মাতব্বরদের জানিয়েছিলেন। সেই চিন্তাভাবনা নিয়ে এবার একান্ন দুর্গার আয়োজন। বিগত প্রায় পাঁচ মাস ধরে মাটি দিয়ে প্রতিম গড়েছেন বাসন্তীর হরেকৃষ্ণপুরের মৃৎশিল্পী শুভাশিস মণ্ডল।৫১ দুর্গা দর্শন করে মেতে উঠবেন সুন্দরবনের প্রান্তিক দর্শনার্থী সহ জেলার বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ।
পুজো কমিটির সম্পাদক অশোক মিদ্দে জানিয়েছেন, সাধারণত গ্রামের মানুষ শহরে গিয়ে প্রতিমা দর্শনের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করেন। কিন্তু আর্থিক পরিকাঠামো অত্যন্ত সংকট হওয়ার কারণে সংবাদপত্রের পাতায় কিংবা টেলিভিশনের পর্দায় চোখ রেখে আনন্দ উপভোগ করতে পারেন না।
গ্রামের মানুষজন যাতে করে দেবীর বিভিন্ন রূপ দর্শন করে আনন্দ পান, তার জন্য আমাদের এই একান্ন দুর্গার প্রয়াস। এছাড়াও পুজোর ক’টা দিন এলাকার দুঃস্থ মানুষজন যাতে করে নতুন বস্ত্র পরিধান করে প্রতিমা দর্শন করতে পারেন, তারজন্য মহাষষ্ঠী থেকে মহানবমী পর্যন্ত এক হাজার বস্ত্র বিতরণ করা হবে।
পুজো কমিটির সভাপতি শ্রীবাস সরদার জানিয়েছেন, আগামী বছর আমরা ৬১ দুর্গার আয়োজন করবে। প্রতি বছর ধাপে ধাপে এমন ভাবেই বাড়তে থাকবে। শেষ হবে ১০৮ দুর্গা দিয়ে।