আগামী সপ্তাহে বড় ‘বোমা’ ফাটানোর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। সেই বোমার পাল্টা জবাব ‘কালীপটকা’ দিয়ে দেবেন বলে হুঁশিয়ারি দিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।শনিবার মালদায় প্রচারে গিয়েছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সেখানে তিনি বলেন, ‘আগামী সপ্তাহে এমন একটা বোম পড়বে যে তৃণমূল বেসামাল হয়ে যাবে।’ তার পর থেকে শুরু হয় জল্পনা। কী বোমা ফাটাতে চলেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা? রবিবার বালুরঘাটে কুমারগঞ্জের সভা থেকে শুভেন্দুর নাম না করে মমতা বলেন, ‘‘তৃণমূলের খেয়ে-পরে তার পর টাকা বাঁচাতে বিজেপিতে গিয়েছে। ইডি, সিবিআই থেকে বাঁচতে বিজেপিতে গিয়েছে। আর দিল্লি গিয়ে গদ্দাররা বলছে, বাংলাকে টাকা দেবেন না। মানুষ ওদের বিশ্বাস করে না, করবেও না। আর গদ্দার বোমা ফাটানোর কথা কাকে বলছে? বোমা ফাটালে জবাবটা হবে কালীপটকা দিয়ে, কারণ গুরুত্ব তোমাদের আমরা দিই না।আমিও টার্গেট, অভিষেকও টার্গেট। এরা আমাদের জীবন পর্যন্ত নিয়ে নিতে পারে। এত্ত ডেঞ্জারাস এরা। মনে রাখবেন, নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে আমরা ভাবি না। আমরা মানুষের নিরাপত্তা নিয়ে ভাবি।’ এদিনের সভা থেকে স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে বিজেপিকেও কড়া আক্রমণ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। বিধানসভা ভোট ও লোকসভা ভোটের পার্থক্য বুঝিয়ে তিনি বলেন, ‘দিল্লির সরকার কী কাজ করেছে গত ১০ বছরে? সেই কৈফিয়ত তো দিতে হবে। এই ভোট দিল্লির। রাজ্যের ভোট নয়। রাজ্যের ভোট হলে কাজের কৈফিয়ত আমি দেব। কিন্তু এখানে আমার জবাব দেওয়ার কিছু নেই। মানুষকে জবাব দিতে হবে দিল্লির বাবুদের।’ এনআরসি প্রসঙ্গেও বিজেপিকে নিশানা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘বলছে,এনআরসি করার আমি কে? আমি না কি কোন হরিদাস পাল? আমি হরিদাস পাল নই, তুমি নয় গুরুদাস পাল। এনআরসি করার অধিকার আমার রাজ্য সরকারের আছে। আমি যদি করতে না দিই, কারও ক্ষমতা নেই করার। আমি করতে দেব না।’ আবাস যোজনার টাকা আটকে রেখেছে কেন্দ্র, বালুরঘাটের সভা থেকে মোদী সরকারকে আবার নিশানা করেন মমতা। পাশাপাশি তিনি এ-ও বলেন, ‘ভোটের পর ১১ লক্ষ বাড়ি আমরাই করে দেব। এই বছরের শেষে একটা কিস্তি দেব, পরের বছরের শুরুতে একটা কিস্তি দেব। আমরা ভিক্ষা চাইব না।’ মমতা বলেন, ‘সব থেকে বড় ডাকাত বিজেপি। বলে আমরা আবাস করতে দিইনি। ৪২ লক্ষ আবাস করেছি। সত্যি হলে কান মুলে ক্ষমা চাইবেন। সব পঞ্চায়েত আমাদের নয়। তা সত্ত্বেও সব দেখে ৪২ লক্ষ বাড়ি আগে করেছি আরও ১১ লক্ষ বাড়ি করব। কেন্দ্র এই টাকা একা দেয় না। মাছের তেলে মাছ ভাজে। বলে আমরা টাকা খেয়েছি। ৪২ লক্ষ বাড়ি ওরা একা করেছে!’ মুখ্যমন্ত্রী রবিবারের জনসভা থেকে বলেন, ‘৩৫০ কেন্দ্রীয় টিম পাঠিয়েছ। অনেক জ্বালিয়েছ। আমি ১০ দিন ধরে বলে যাচ্ছি শ্বেতপত্র প্রকাশ করো। বিহার, বাংলা, উত্তরপ্রদেশ এবং মহারাষ্ট্রের এজি রিপোর্ট-সহ শ্বেতপত্র প্রকাশ করো। আমি দেখতে চাই কে চোর, আর কে সাধু।’ পাশাপাশি বালুরঘাটের সভা থেকে নাম না করে সুকান্তকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, ‘বিজেপি দেশ বিক্রি করে দিয়েছে। সংবিধান ভেঙে দিয়েছে। আমাদের লোকেরা বুক চিতিয়ে সংসদে লড়াই করে। আপনাদের সাংসদ ঠান্ডা ঘরে ঘুমায়। কোনও কথা বলে না। বলে, বাংলায় ১০০ দিনের কাজের টাকা দিয়ো না। যে লোক বলে বাংলাকে বঞ্চিত করো, টাকা দিয়ো না, তাঁকে আপনারা ভোট দেবেন? এঁরা বার বার প্রধানমন্ত্রীর কাছে গিয়ে বলেছে বাংলাকে টাকা দেবেন না।’ পাশাপাশি সিপিএমকে নিশানা করে মমতা বলেন, ‘মানুষের আর কোনও ক্ষমতা থাকবে না, স্বাধীনতা থাকবে না এরা ক্ষমতায় এলে। এই নির্বাচনকে গুরুত্ব দিন। জলপাইগুড়িতে সিপিএম বাড়ি বাড়ি গিয়ে বলেছে, ভোট বিজেপিকে দাও। ফরওয়ার্ড ব্লককে নয়। কংগ্রেস ভোট ভাগ করার জন্য দেখে দেখে দাঁড়িয়েছে। বিজেপির একটা আসন কমলে দিল্লি থেকে বিজেপির চলে যাওয়া।’ জয় নিয়ে মমতা জানান, ‘বিজেপিকে সরানো হবেই। জয় আসবেই।’
শুভেন্দুর ‘বোমা’র পালটা ‘কালীপটকা’ চ্যালেঞ্জ মমতার
Html code here! Replace this with any non empty raw html code and that's it.