ভূপতিনগরে এনআইএ-র উপর হামলার ঘটনায় পাল্টা কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।শনিবার দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটের তপনে জনসভা করতে যাওয়ার পথে কর্ণজোড়া হেলিপ্যাডে দাঁড়িয়ে কেন্দ্রীয় এজেন্সির ভূমিকায় প্রশ্ন তোলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যা। তাঁর প্রশ্ন, “এনআইএ কাউকে জানিয়ে গিয়েছিল? ওরা কেন মধ্যরাতে পুলিশকে না জানিয়ে গেল? নিয়ম হল লোকাল পুলিশকে জানিয়ে যাওয়া। মধ্যরাতে গ্রামে অচেনা কাউকে দেখলে যা হওয়ার তাই হয়েছে। ভোটের আগে কেন গ্রেপ্তার করবে? বিজেপি কি মনে করছে সব বুথ এজেন্ট, ভোট ম্যানেজারদের অ্যারেস্ট করে ওরা ভোটে জিতবে? শূন্যে গুলি ছুড়ছে। কী অধিকার আছে এনআইএ-র? শুধু বিজেপিকে সাপোর্ট দেওয়ার জন্য। আমরা গোটা বিশ্বের মানুষের কাছে বিজেপির এই নোংরা রাজনীতির বিরুদ্ধে সরব হওয়ার আবেদন করছি।” পাশাপাশি তপনের সভা থেকে মমতা বলেন, “হামলাটা কে করেছে? মেয়েরা করেনি। করেছে এনআইএ। গদ্দার জানে হারবে। তাই লোকের বাড়ি গিয়ে গিয়ে কোথায় একটা চকোলেট বোম ফেটেছিল ২০২২ সালে। যদি মহিলাদের বাড়ি গিয়ে, গ্রামে গিয়ে অত্যাচার করে। মহিলারা কী করবে? শাঁখা-পলা পরে, মাথায় ওড়না দিয়ে বসে থাকবে? মহিলারা তাঁদের ইজ্জত, সম্মান রক্ষা করবে না? তুমি রাতের বেলায় ঢুকে যাবে বাড়ি বাড়ি। তৃণমূলের সব এজেন্টকে গ্রেপ্তার করতে হবে? আমিও চ্যালেঞ্জ করছি, যাঁদের গ্রেফতার করেছে, তাঁদের পরিবারের সদস্যদের, মা বোনেদের আমি এজেন্ট করব। আমাদের আটকাতে পারবে না।” তাঁর দাবি, ভোটের মুখে এলাকায় তৃণমূলের সংগঠনকে দুর্বল করে দিতেই কেন্দ্রের বিজেপি সরকার চক্রান্ত করে এজেন্সিকে দিয়ে এই কাজ করাচ্ছে। জয় নিয়ে নিশ্চিত থাকলে কেন তৃণমূল কর্মীদের গ্রেফতার করাতে হচ্ছে, সেই প্রশ্নও তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে মমতা বলেন, “আমরা পক্ষপাতদুষ্ট নির্বাচন কমিশন চাই না। আমরা চাই কমিশন নিজেদের মতো কাজ করুক। বিজেপি ইলেকশন কমিশন চাই না। যত দোষ রাজ্যের বেলায়?” কেন্দ্রীয় কর্তাদের উদ্দেশেও বার্তা দিয়েছেন মমতা। বলেছেন, ‘‘চকলেট বোমা ফাটালেও এনআইএ চলে আসছে। আরশোলা, ছারপোকা কামড়ালেও মানবাধিকার কমিশনকে পাঠাচ্ছে। আমরা সব নজরে রাখছি। ভুলে যাচ্ছি না। যে অফিসারেরা এটা করছেন, আমি কাউকে ভয় দেখাচ্ছি না, বিজেপি কিন্তু সারাজীবন থাকবে না।’’ বাংলায় কেন্দ্রীয় সংস্থার তৎপরতা প্রসঙ্গে সিপিএমকেও আক্রমণ করেছেন মমতা। তিনি বলেন, ‘‘বিজেপির যত রাগ শুধু তৃণমূলের উপরে। সিপিএম তো সবচেয়ে বড় চোরের দল। ৩৪ বছর ধরে চুরি করেছে। ওদের একটা নেতাকেও গ্রেফাতর করেনি।’’ পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘আয়ুষ্মান ভারত’ প্রকল্পের বিকল্প হিসাবে বাংলায় ‘স্বাস্থ্যসাথী’র কথা বললেন মমতা। তাঁর কথায়, ‘‘প্রধানমন্ত্রী বলেন বাংলার সরকার আমার কথা শোনে না। কেন শুনব? আমরা কি বিজেপির চাকর? যেটায় মানুষের লাভ হবে, আমি সেটা করব। ‘আয়ুষ্মান ভারত’ কেন করব? ‘স্বাস্থ্যসাথী’তে ন’কোটি পরিবার সাহায্য পান। ‘আয়ুষ্মান ভারত’-এ ১ কোটি মানুষ পেতেন। বাকি ৮ কোটি বাদ যাবে?’’ অন্যদিকে, মোদীর গ্যারান্টিকে তুলোধনা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোরাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, ‘বিজেপির গ্যারান্টি হচ্ছে শূন্য। এখনও পর্যন্ত কিছু করেছে? দশ বছর বিজেপি জিতেছে। চা–বাগানের দশ লক্ষ শ্রমিকের রোজগার বন্ধ করে দিয়েছিল। পাতা তোলা বন্ধ করে দেন। আমি খুলে দিয়েছি। দশ লক্ষ শ্রমিককে সাহায্য করেছি। ছোট চা বাগানের ১০ লক্ষ শ্রমিক বেকার হয়ে যাবে শুনে আমি সঙ্গে সঙ্গে সবাইকে জানালাম। কাজ শুরু হয়েছে।’ পাশাপাশি, জলপাইগুড়িতে ঝড়ের ইস্যুকে সামনে নিয়ে এসে বিজেপি নেতাদের তুলোধনা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নাম না করে সুকান্ত মজুমদার ও শুভেন্দু অধিকারীকে উদ্দেশ্য করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আপনাদের এখানে ওই কুসান্তবাবু আছেন, আর ওদিকে আছে গদ্দার। এরা মনে করে, যা বলবে তাই করতে হবে। গায়ের জোরে চালাবে। ওরা বাংলার গদ্দার, বাংলার কুলাঙ্গার।’
মহিলারা হামলা করেননি, এনআইএ হামলা করেছে: মমতা
Html code here! Replace this with any non empty raw html code and that's it.