লোকসভায় স্মোককাণ্ডের প্রতিবাদে সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে চূড়ান্ত বিশৃঙ্খলার অভিযোগ বিরোধী সাংসদদের বিরুদ্ধে। তার জেরে এবার লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীররঞ্জন চৌধুরী-সহ মোট ৩৩ জন সাংসদকে সাসপেন্ড করা হল। আগে ১৪ জন বিরোধী সাংসদকে সাসপেন্ড করা হয়েছিল। এবার সেই সংখ্যা বেড়ে হল ৪৭।
শীতকালীন অধিবেশনের বাকি দিনগুলির জন্য এখনও পর্যন্ত সাসপেন্ড করা হল মোট ৪৭ সাংসদকে (আগের সাসপেনশন মিলিয়ে)। গত সপ্তাহে ১৩ ডিসেম্বর বুধবার সংসদে দুই যুবক ঢুকে পড়েছিল। হাতে ছিল ক্যানিস্টার। তারা হলুদ ধোঁয়ায় চারিদিক ছেয়ে ফেলে সংসদের কক্ষে। এভাবে সংসদের ভিতর বহিরাগতদের অনুপ্রবেশ নিয়ে নিরাপত্তা ইস্যুতে কেন্দ্রকে তোপ দাগে বিরোধীরা।
সোমবাররও বিরোধীদের সেই ক্ষোভ চলতে থাকে।বিরেধীদের প্রতিবাদের জেরে সোমবার উত্তাল হয় লোকসভা। তুমুল চিৎকার শুরু হয় সংসদ কক্ষে। প্রথমে দুপুর ২টো ৪৫ মিনিট, পরে তিনটে পর্যন্ত সভার কাজ মুলতুবি করে দেন স্পিকার। তার পরেও পরিস্থিতি তপ্ত হওয়ায় অধীর-সহ ৩০ জনের বেশি সাংসদকে সাসপেন্ড করেন স্পিকার।
সাসপেন্ড হওয়া সাংসদদের তালিকায় রয়েছেন বাংলার অনেক তৃণমূল সাংসদও। কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, অপরূপা পোদ্দার, প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়, সুনীল মণ্ডল, সৌগত রায়, কাকলি ঘোষ দস্তিদার, প্রতিমা মণ্ডল, অসিত মাল, শতাব্দী রায়কে সাসপেন্ড করেছেন স্পিকার। এ ছাড়া এই তালিকায় রয়েছেন ডিএমকের তিন সাংসদ টিআর বালু, এ রাজা এবং দয়ানিধি মারান।
এই অধিবেশনে লোকসভা ও রাজ্যসভা মিলিয়ে মোট ৪৭ জন সাংসদকে সাসপেন্ড করা হল। সাম্প্রতিক সময়ে একসঙ্গে এত জন সাংসদকে সাসপেন্ড করার কথা ঘোষণা করেন। আগামী ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে শীতকালীন অধিবেশন। তত দিন এই সাংসদেরা অধিবেশনে যোগ দিতে পারবেন না।
লোকসভা থেকে নিলম্বিত হওয়ার পর অধীর চৌধুরী বলেন, ‘‘বিজেপির সংখ্যাধিক্য রয়েছে। তাই দিয়ে সংসদে পেশিশক্তি দেখাচ্ছে। সংসদকে বিজেপি ও আরএসএসের কার্যালয়ে পরিণত করতে চাইছে।’’ লোকসভায় কংগ্রেস নেতা আরও বলেন, ‘‘সংসদের নিরাপত্তা যে ভাবে ভেঙে পড়েছে, তা নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিবৃতি দাবি করা হয়েছিল।
তাঁরা বাইরে অনেক কথা বললেও সংসদে কিছু বলছেন না। সেই প্রশ্ন তুললেই বিরোধীদের উপর আক্রমণ নেমে আসছে।’’ তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দু শেখর রায়ও জানিয়েছেন, “আগেই ১৪ জনকে সাসপেন্ড করা হয়েছিল। আজ আরও ৩৩ জন বিরোধী সাংসদকে লোকসভা থেকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। তার মধ্যে আমাদের দলের অন্তত আটজন রয়েছেন।
আমাদের শুধু দু’টি দাবি ছিল। সংসদ চলছে, কিন্তু প্রধানমন্ত্রী বা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কেউই সংসদকে এই বিষয়ে কিছু জানাচ্ছেন না। বিরোধী কণ্ঠকে স্তব্ধ করার জন্য যে পদক্ষেপ করা হচ্ছে, তা গণতন্ত্রের পক্ষে ধ্বংসাত্মক বলে আমরা মনে করি।”