সানওয়ার হোসেন, কুলপি: পঞ্চায়েত ভোটের রেশ এখনও কাটল না। সোমবার রাতে দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলপির গাজিপুরের দৌলতাবাদ গ্রাম দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে উত্তাল হয়ে উঠল। চলল দেদার বোমাবাজি, বাড়ি ভাঙচুর ও মারধরের ঘটনা। তৃণমূল কংগ্রেসের পার্টি অফিস ভাঙচুরের অভিযোগও উঠল। এই ঘটনার পর থেকে এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা রয়েছে।
ঘটনার সূত্রপাত পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর থেকে। এই বুথে তৃণমূলের প্রার্থী রাহান হালদার পরাজিত হন। জয়ী হন আইএসএফ প্রার্থী রেজাউল পাইক। এই গাজিপুর পঞ্চায়েতে তৃণমূল বোর্ড গঠনের ম্যাজিক ফিগার থেকে দূরে ছিল। পরে রেজাউল পাইক তৃণমূলে যোগ দেন। তিনি তৃণমূল অঞ্চল সভাপতি আবদুর রহিম মোল্লার অনুগামী হিসেবে পরিচিত। এই ঘটনায় দুই গোষ্ঠী কোন্দল রয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।
দৌলতাবাদের মাঝের পাড়ায় এদিন রাতের বোমাবাজিতে ক্ষতিগ্রস্ত তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকদের অভিযোগ, আমরা তৃণমূল করে হেরে যাওয়ার কারণে প্রায়ই আমাদের নানারকম কটূক্তি ও হুমকি দেয় আইএসএফের লোকজন। আমাদের বাড়ির বেশিরভাগ লোক বাইরে কাজ করে। ছুটিতে সবাই বাড়ি এসেছে। এদিন রাতে আমাদের বাড়ি লক্ষ্য করে বোমা ছোঁড়া হয়। বাচ্চাদের নিয়ে আমরা আতঙ্কে আছি।
এই বুথের পরাজিত তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী রাহান হালদার জানিয়েছেন, এখানে আইএসএফ জেতার পর থেকেই লাগাতার অশান্তি করে আসছে। এদিন রাতে আমাদের এক কর্মী বাড়ি ফেরার সময় দলীয় কার্যালয়ের সামনে তাঁর ওপর অতর্কিত হামলা চালানো হয় এবং কার্যালয় ভাঙচুর করে ওরা। তিনি প্রাণ ভয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন।
তাঁকে লক্ষ্য করে বোম মারা হয় এবং একাধিক তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীর বাড়ি লক্ষ্য করে বোমাবাজি করা হয়েছে। দু’জন তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এই ঘটনা ব্লক নেতৃত্ব এবং পুলিশ প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। প্রশাসন নিশ্চয় সঠিক তদন্ত করবে।যদিও দৌলতাবাদের আইএসএফ জয়ী প্রার্থী রেজাউল পাইকের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।
তবে আইএসএফের কর্মী-সমর্থকরা বলেন, আমরা গত পঞ্চায়েত ভোটে জেতার পর অঞ্চল সভাপতি আব্দুর রহিম মোল্লার হাত ধরে তৃণমূলে যোগ দিই। এটা এখানকার পরাজিত তৃণমূলীরা সহ্য করতে পারেনি। তাই নিজেরা এই সমস্ত ঘটনা ঘটিয়ে আমাদের নামে দোষারোপ করছে।
আইএসএফের তরফে অভিযোগ, বোমা উভয়ের বাড়িতেই পড়েছে। তাঁদেরও দু’জন আহত কর্মী হাসপাতালে ভর্তি।কুলপির বিধায়ক যোগরঞ্জন হালদার জানান, গাজিপুর অঞ্চলে দৌলতাবাদে আইএসএফ জিতে তৃণমূলীদের উপর খুব অত্যাচার চালাচ্ছে। এর আগেও বেশ কয়েকবার পুলিশ গিয়ে সামাল দিয়েছে।
বিধায়ক আরও বলেন, ওই বুথের আইএসএফ প্রার্থী শুধুমাত্র বোর্ড গঠনে সমর্থন করেছেন। কিন্তু দলে যোগদান করেননি। তবে এদিনের ঘটনার বিস্তারিত আমি জানি না। অবশ্যই খোঁজখবর নেব এবং সাংগঠনিক ও প্রশাসনিকভাবে পদক্ষেপ নেওয়ার চেষ্টা করা হবে।