রবীন্দ্রনাথ মণ্ডল, নামখানা: প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা পেতে দুর্গা আরাধনায় ব্রতী হলেন মৌসুনী দ্বীপের গৃহবধুরা। এই পুজোকে ঘিরে এই মুহূর্তে তাঁদের প্রস্তুতি তুঙ্গে।সুন্দরবনের বুকে যখনই কোনও প্রাকৃতিক দুর্যোগ হানা দেয়, তখন সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় এই মৌসুনী দ্বীপ।
নদীবাঁধের ভাঙন বারে বারে তাদেরকে বেঘর করেছে । তাই এবার প্রাকৃতিক দুর্যোগের হাত থেকে রক্ষা পেতে দেবী দুর্গার আরাধনায় ব্রতী হলেন মৌসুনী দ্বীপের বালিয়াড়ার গৃহবধূরা।একসময় এই দ্বীপের আয়তন ছিল প্রায় ১০০ বর্গ কিলোমিটার। ভাঙনের আতঙ্কে আগেই দ্বীপ ছেড়েছেন বহু বাসিন্দা।
দ্বীপে বসবাসকারী মানুষের সংখ্যাটা এখন মেরেকেটে ৫ হাজারের আশেপাশে। বর্তমানে এই দ্বীপের আয়তন কমে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৭০ বর্গ কিলোমিটার। এই দ্বীপকে ঘিরে রেখেছে বটতলা নদী, চিনাই নদী ও বঙ্গোপসাগর সমুদ্র।হোম স্টে টুরিজমের জমানায় বিগত বছরপাঁচেক ধরে পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছিল সুন্দরবনের মৌসুনী দ্বীপ।
বুলবুল, আমফান ও ইয়াসে সুন্দরবনের ক্ষতিগ্রস্ত দ্বীপগুলির মধ্যে অন্যতম এই মৌসুনী দ্বীপ। ইয়াসের পর থেকে এই দ্বীপের নদী ও সমুদ্রের বাঁধ আরও বেহাল হয়ে পড়েছে। তারপর থেকে বাঁধ ভাঙার আতঙ্ক কখনওই পিছু ছাড়েনি দ্বীপের বাসিন্দাদের। তাই এবার প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষা পেতে
এবং বাঁধ ভাঙনের হাত থেকে মুক্তি পেতে দেবী দুর্গার আরাধনায় ব্রতী হলেন মৌসুনী দ্বীপের বালিয়াড়ার বেশ কয়েকটি পরিবারের গৃহবধূরা। মৌসুনীর বালিয়াড়ার বাসিন্দা ২৪ জন গৃহবধূ মিলে দুর্গাপুজোর উদ্যোগ নিয়েছেন। প্রস্তুতি এখন তুঙ্গে। একদিকে যেমন চলছে প্রতিমা তৈরির কাজ, অন্যদিকে তেমন চলছে মণ্ডপসজ্জার কাজ।
উদ্যোক্তা কমিটির ২৪ জন মহিলা সদস্যা মাসখানেক ধরে কোনওরকমে বাড়ির সমস্ত কাজ সামলে বেরিয়ে পড়েন গ্রামে। পৌঁছে যান গ্রামের বাড়ি বাড়ি। পুজোর জন্য তাঁরা সংগ্রহ করছেন চাল, ডাল, আলু থেকে শুরু করে চাঁদা। এই পুজোকে ঘিরে মেতে উঠবে সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকার মানুষজন।