সংবাদ সংস্থা: মঙ্গলবার সংসদের লোকসভা কক্ষে বিল পেশ এবং বুধবার লোকসভায় পাস হয়েছে মহিলা সংরক্ষণ বিল।তবে মহিলা সংরক্ষণ বিলের সমর্থন করলেও এই বিল প্রসঙ্গে প্রশ্ন তুললেন তৃণমূল কংগ্রেসের একাধিক সাংসদ৷ বুধবার সংসদে বক্তৃতা করার সময় তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার বলেন, ‘‘আমি আজ এমন একটি বিলকে সমর্থন করছি, যা আমার নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইতিমধ্যেই পশ্চিমবঙ্গে কার্যকর করেছেন।
ভারতবর্ষে একমাত্র এই রাজ্যেই মহিলা মুখ্যমন্ত্রী রয়েছেন। যেখানে দেশের ১৬টি রাজ্যে বিজেপির সরকার থাকলেও, ওদের একজনও মহিলা মুখ্যমন্ত্রী নেই।’’কাকলি জানান, সদ্য সমাপ্ত পঞ্চায়েত নির্বাচনে জেলা পরিষদে জয়ীদের মধ্যে ৫৩.৬৬ শতাংশ, পঞ্চায়েত সমিতিতে জয়ীদের মধ্যে ৪২.৯৭ শতাংশ এবং গ্রাম পঞ্চায়েতে জয়ীদের মধ্যে ৩৩.৬৬ শতাংশ বা তার বেশি জনপ্রতিনিধি মহিলা।
লোকসভাতেও তৃণমূল কংগ্রেসের ন’জন মহিলা সাংসদ রয়েছেন বলে তিনি জানান। যার অর্থ, লোকসভায় তৃণমূল কংগ্রেসের মোট সাংসদদের মধ্যে ৪০ শতাংশ মহিলা। যা ১৪ শতাংশের জাতীয় গড় এবং বিজেপির ১৩ শতাংশ মহিলা সাংসদদের তুলনায় অনেকটাই বেশি।তৃণমূল সাংসদের দাবি, ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গের ৪২টি লোকসভা আসনের মধ্যে তৃণমূল কংগ্রেস ১৭ জন মহিলাকে প্রার্থী করেছিল।
অর্থাৎ, তৃণমূল কংগ্রেস যতগুলি আসন থেকে লড়াই করছিল, তার ৪০ শতাংশ আসনে মহিলা প্রার্থী দেওয়া হয়েছিল। এমনকি, ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের সময়েও তৃণমূল কংগ্রেস ৫০ জন মহিলাকে টিকিট দিয়েছিল। তাঁদের মধ্যে জয়ী হন ৩৪ জন। তাঁদের মধ্যে আটজন নির্বাচিত মহিলা প্রতিনিধি নির্দিষ্ট মন্ত্রী পদে দায়িত্ব পেয়েছেন বলে সংসদে জানান কাকলি।
কাকলি ঘোষ দস্তিদার বলেন, ‘‘১৯৯৬ সালে যখন প্রথমবার মহিলা সংরক্ষণ বিল পেশ করা হয়েছিল, তখন থেকেই তিনি আন্তরিকভাবে এই বিল কার্যকর করার প্রয়াস করেছেন। শ্রীমতী গীতা মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে সেই সময় যে কমিটি গঠিত হয়েছিল, তিনি সেই কমিটিরও সদস্য ছিলেন এবং বিল পাশ করানোর পক্ষে সওয়াল করেছিলেন।’’তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ মহুয়া মৈত্রও এদিন বিজেপি সরকারের তুমুল সমালোচনা করেন৷
বলেন, নির্বাচনী রাজনীতিতে মহিলাদের ক্ষমতায়ন ও প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে তাঁর দলের কোনও আইনের প্রয়োজন নেই।তাঁর কথায়, ‘‘সত্যিটা হল, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, বর্তমানে ভারতের একমাত্র মহিলা মুখ্যমন্ত্রী, তিনিই এই বিলের জন্মদাত্রী। প্রকৃত ভাবনাটি তাঁরই মস্তিষ্কপ্রসূত।
সেই তিনিই নিঃশর্তভাবে ৩৩ শতাংশেরও বেশি মহিলা সাংসদকে তাঁর দলের টিকিটে সংসদে পাঠিয়েছেন। এই সরকার যা আনছে, সেটি মহিলা সংরক্ষণ বিল নয়। আদতে এটি হল, মহিলা সংরক্ষণ পুনর্নির্ধারণ বিল এবং এভাবেই সেটির পুনরায় নামকরণ করা উচিত। এর লক্ষ্য হল আরও দেরি করা।’’