Wednesday, December 6, 2023
Homeদেশবিরোধীদের সমর্থনে লোকসভায় পাশ মহিলা সংরক্ষণ বিল

বিরোধীদের সমর্থনে লোকসভায় পাশ মহিলা সংরক্ষণ বিল

সংবাদ সংস্থা: লোকসভায় পাশ হয়ে গেল মহিলা সংরক্ষণ বিল।লোকসভা এবং বিভিন্ন রাজ্যের বিধানসভায় এক তৃতীয়াংশ আসন মহিলাদের জন্য সংরক্ষণের জন্য মঙ্গলবার পুরোদস্তুর নতুন বিল পেশ করেছিল মোদী সরকার। যার পোশাকি নাম, ‘নারী শক্তি বন্দন অধিনিয়ম’।কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী অর্জুন রাম মেঘওয়াল ১২৮তম সংবিধান সংশোধনী বিল হিসাবে তা লোকসভায় পেশ করেন। এই বিলে লোকসভা এবং বিধানসভাগুলিতে মহিলাদের জন্য ৩৩ শতাংশ আসন সংরক্ষণের কথা বলা হয়েছে। বুধবার সকাল ১১টা থেকে লোকসভায় বিলটির বিষয়ে আলোচনা শুরু হয়।বুধবার লোকসভায় মহিলা বিল নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছিল। সেখানে রায়বরেলীর কংগ্রেস সাংসদ সনিয়াকে সামনে রেখেই কংগ্রেস শিবির ‘মোদীর কৃতিত্বে ভাগ বসানোর’ চেষ্টা শুরু করে বিরোধীরা। সনিয়া তাঁর বক্তৃতায় মনে করিয়ে দেন, ২০১০ সালে তিনি ক্ষমতাসীন ইউপিএ জোটের চেয়ারপার্সন থাকাকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের সরকার রাজ্যসভায় বিলটি পাশ করিয়েছিল। এদিন বক্তব্য রাখতে গিয়ে রাহুল গাঁধী বিজেপি সরকারকে নিশানা করে বলেন, ‘মোদি সরকারে মহিলা সংরক্ষণ বিল অসম্পূর্ণ।’ ওবিসিদের জন্য আসন সংরক্ষণের দাবি জানিয়ে লোকসভায় বক্তব্য রাখেন রাহুল গাঁধী। তিনি বলেন, ‘আজই মহিলা সংরক্ষণ বিল পাস করে আইন প্রণয়ন করুন। জনগণনার প্রয়োজন নেই, সরাসরি ৩৩ শতাংশ মহিলাকে সংরক্ষণের আওতায় আনুন।’ তাঁর তোপ, ‘দেশের ৯০ জন সচিবের মধ্যে মাত্র ৩ জন ওবিসি সমাজের। অবিলম্বে জাত গণনা করুন, না হলে আমাদের সময় হওয়া জাতগণনার তথ্য প্রকাশ করুন। আপনারা না করলে আমরা প্রকাশ করে দেব।’ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী-সহ সরকার এবং বিরোধী পক্ষের সাংসদেরা বিতর্কে অংশ নেন।লোকসভায় রাহুল গাঁধীর ওবিসি আক্রমণের জবাব দেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তিনি বক্তব্য রাখার সময় বলেন, ‘বিজেপির ২৯ শতাং অর্থাৎ ৮৫ জন সাংসদ ওবিসি সম্প্রদায়ের। কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় ২৯ জন মন্ত্রী ওবিসি।’ সেই আলোচনার শেষের দিকে লোকসভায় চলে আসেন মোদী। তারপরই ভোটাভুটি হয়। প্রতিশ্রুতি মতোই বিলের প্রতি সমর্থন উজাড় করে দেন বিরোধীরা।বুধবার বিলটির পক্ষে ভোট দেন ৪৫৪ জন। আর মাত্র দুজন ভোট দেন এর বিপক্ষে।এর পর প্রথামাফিক রাজ্যসভায় পাশ করিয়ে বিলটিকে রাষ্ট্রপতির কাছে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে। রাষ্ট্রপতির ছাড়পত্র পেলে কার্যকর হবে মহিলাদের জন্য লোকসভা-বিধানসভায় আসন সংরক্ষণ।বিলটি পাশ হলে দেশের সব বিধানসভা এবং লোকসভায় ৩৩ শতাংশ আসন মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে।অতীতে একাধিকবার এই মহিলা সংরক্ষণ বিলের বিরোধিতা হয়েছে। মূলত সমাজবাদী পার্টি এবং আরজেডির এই বিলে প্রবল আপত্তি জানিয়ে এসেছে। ১৯৯৮ সালে অটলবিহারী বাজপেয়ী সরকারের আমলে লোকসভায় ওই বিল পেশ করেছিলেন তৎকালীন আইনমন্ত্রী এম থাম্বিদুরাই। কিন্তু সেই বিলের কপি ছিঁড়ে ফেলেন আরজেডির এক সাংসদ। কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধীর উদ্যোগে, ২০০৮ সালে রাজ্যসভায় ওই বিল পাশ করানোর চেষ্টা হয়। সেবারেও বিরোধিতা করে আরজেডি এবং সমাজবাদী পার্টি। বস্তুত, এর আগে যতবার এই বিল পাশ করানোর চেষ্টা হয়, প্রতিবারই বাধা দেয় আরজেডি এবং সমাজবাদী পার্টি।কিন্তু এবার সোনিয়া গান্ধীর নেতৃত্বে বিরোধীরা সমর্থনের কথা আগেই ঘোষণা করেছিল বিরোধী শিবির। এগিয়ে এসেছিলেন আরজেডির মহিলা নেত্রী রাবড়ি দেবী, সমাজবাদী পার্টির ডিম্পল যাদব, বিএসপির মায়াবতীরা। শর্তসাপেক্ষে বিলটির পাশে দাঁড়ান তাঁরা। ফলে বিলটি প্রায় বিরোধীহীন ভাবে পাশ হল লোকসভায়।

Most Popular