রবীন্দ্রনাথ মণ্ডল, নামখানা: একবিংশ শতাব্দীতে দাঁড়িয়ে এখনও সুন্দরবনের বহু জায়গায় বাল্যবিবাহের মতো সামাজিক ব্যাধির পাশাপাশি বেড়েছে স্কুলছুট ছাত্রছাত্রীদের সংখ্যা ও শিশুশ্রম। বিশেষ করে লকডাউনের পর থেকে বাল্যবিবাহ, স্কুলছুট ও শিশুশ্রম যেন নিত্যকার ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সুন্দরবন এলাকার কাকদ্বীপ, নামখানা, সাগর ব্লকের বেশিরভাগ জায়গাতেই এই ধরনের ঘটনাগুলি বাড়ছে। বাল্যবিবাহ রোধের জন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকার একের পর এক প্রকল্প গ্রহণ করেছে। কন্যাশ্রী থেকে রূপশ্রী প্রকল্প। বিশেষ করে বর্তমান সময়ে প্রেমগঠিত বিয়ে হওয়ার কারণে বাল্যবিবাহের আধিক্য বেড়েছে।
সুন্দরবন এলাকায় ইয়াস বিপর্যয়ে বন্যা হওয়ার পরে বেশিরভাগ ঘরের ছেলেরা পড়াশোনা ছেড়ে ভিন রাজ্যে কাজের জন্য পাড়ি দিচ্ছে। বাল্যবিবাহ, শিশুশ্রম রোধের জন্য সরকার আইন চালু করেছে। বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন গ্রামে গ্রামে গিয়ে এলাকাবাসীকে সচেতন করছে। তারপরেও হুঁশ ফিরছে না সাধারণ মানুষের।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার নামখানা ব্লকের মৌসুনীর কুসুমতলাতে স্কুলছুট ছাত্রছাত্রীদের স্কুলে ফেরাতে উদ্যোগ নিল রূপান্তর ফাউন্ডেশন। এটি একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। বেশ কয়েক বছর ধরে সুন্দরবন এলাকার মহিলাদের স্বনির্ভর করার লক্ষ্যে তারা কাজ করে চলেছে। পাশাপাশি বাল্যবিবাহ, শিশুশ্রম ও স্কুলছুট ছাত্র-ছাত্রীদের স্কুলে ফেরানোর লক্ষ্যে কাজ করছে। মৌসুনীর কুসুমতলাতে স্কুলছুট ছাত্রছাত্রীদের স্কুলে ফেরানোর জন্য সামার ক্যাম্প নামে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন বিষয়ে সচেতনতার ওপর নাচ, গান, আবৃত্তি, নাটক অনুষ্ঠিত হয়। পাশাপাশি মেয়েদের কবাডি খেলার আয়োজন করা হয়। এই খেলার প্রথম হয় কুসুমতলা। রূপান্তর ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা স্মিতা সেন বলেন, আমরা স্কুলছুট ছাত্র-ছাত্রীদের স্কুলে ফেরাতে এমন উদ্যোগ নিয়েছি।
শুধু আমরা এ বিষয়ে সচেতন করলে হবে না। অভিভাবকদেরও সচেতন হতে হবে। তবেই স্কুলছুট ছাত্রছাত্রীদের সংখ্যা কমানো সম্ভব হবে।