
রবীন্দ্রনাথ সামন্ত, কাকদ্বীপ: উচ্চ মাধ্যমিকে কলা বিভাগে ৪৮৬ নম্বর পেয়ে রাজ্যে একাদশ স্থান এবং কাকদ্বীপ ব্লকে প্রথম হয়েছেন পাথরপ্রতিমার কুতুবউদ্দিন বদ্যি। তিনি এ বছর বামানগর সুবালা উচ্চ বিদ্যালয়ের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী ছিলেন। কুতুবউদ্দিন বাংলায় ৯৪, ইংরেজিতে ৯৫, এডুকেশনে ৯৮, ফিলোজফিতে ৯৯, পল সায়েন্সে ৯৪ এবং হেলথ অ্যান্ড ফিজিক্যাল এডুকেশনে ১০০ নম্বর পেয়েছেন।
কুতুবউদ্দিনের পরিবার, গ্রামবাসী এবং বিদ্যালয়ের সবাই তাঁর এই রেজাল্টে খুবই খুশি হয়েছেন। আলাদাভাবে তাঁর কোন প্রাইভেট টিউশন ছিল না। হস্টেলের কড়া নজরদারিতে এই সাফল্য এসেছে বলে তিনি জানিয়েছেন। তাছাড়া বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় এই সাফল্য এসেছে বলে তিনি জানান।
বিশেষ করে হস্টেল সুপার বিধানমোহন কাঞ্জিলালের সুচারু দৃষ্টিভঙ্গি এই কৃতিত্বের মূল চাবিকাঠি বলে কুতুবউদ্দিন সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন। পড়াশোনার পাশাপাশি ফুটবল হল তার প্রিয় খেলা। এপিজে আব্দুল কালাম তাঁর প্রিয় প্রাণপুরুষ।
ইন্টারন্যাশনাল রিলেশনশিপ বা আন্তর্জাতিক সম্পর্ক নিয়ে পড়াশোনার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন কুতুবউদ্দিন। এ বিষয়ে বামানগর সুবলা উচ্চ বিদ্যালয়েরর প্রধান শিক্ষক বলদেব বেরা জানান, কুতুবউদ্দিন এক নম্বর কম পাওয়ার কারণে রাজ্যে দশম স্থানে পৌঁছতে পারেনি। তাই আফসোস থেকে গিয়েছে।
মা-বাবা তিন ভাই এবং দুই বোন নিয়ে তাঁদের সংসার। বড়দির বিয়ে হয়ে গিয়েছে। বাবা লতিফ আলি বদ্যি এখন অসুস্থ। সে কারণে বড় ভাই আজাহারের স্নাতকে দ্বিতীয় বর্ষের পর পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যায়। কুতুবউদ্দিন বাড়ির মেজো ছেলে। বড় ভাই এখন সংসার সামলানোর জন্য পরিযায়ী শ্রমিকের কাজ নিয়েছেন।
দেড় বিঘা কৃষিজমি রয়েছে তাঁদের। আয়লা, আমফান, বুলবুল, ইয়াসের মত একাধিক প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে বহুবার জমিতে নোনা জল ঢুকেছিল। সে কারণে জমির উর্বরা শক্তি নষ্ট হয়ে যায়। ফসল তেমন পাওয়া যায়নি বলে কুতুবউদ্দিন জানিয়েছেন।
তাই দাদা আজহারের উপর নির্ভর করতে হচ্ছে পরিবারের সবাইকে। পড়াশোনার খরচ কীভাবে বহন করবেন, তা নিয়ে চিন্তায় রয়েছেন পাথরপ্রতিমার জি-প্লট গ্ৰাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দা কুতুবউদ্দিন।