
স্টাফ রিপোর্টার: বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ৩২ হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে গিয়েও প্রশ্নের মুখে পড়তে হল প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে। বিচারপতি সুব্রত তালুকদার এবং বিচারপতি সুপ্রতীম ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ এদিন পর্ষদের আইনজীবীদের প্রশ্ন করেন, “চাকরিহারাদের তো আর নেকড়ের মুখে ফেলে দেয়নি সিঙ্গল বেঞ্চ।
প্রত্যেককেই প্রক্রিয়ার মধ্যে রাখা হয়েছে। যাতে আবার সবাই সুযোগ পায়। পরীক্ষা দিয়ে চাকরি পেতে সমস্যা কোথায়?” ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, সিঙ্গল বেঞ্চের রায়ে কিছু কঠিন বাস্তব তুলে ধরা হয়েছে।পর্ষদের কাছে জানতে চাওয়া হয়, ‘পর পর অনেকে ইন্টারভিউ-অ্যাপটিচিউড টেস্টে ৯.৫, ১০ পেয়েছে। এটা কী করে সম্ভব? যার জবাবে পর্ষদ জানায়, ‘হাজার হাজার প্রার্থী। তাই অনেকে একই নম্বর পেতেই পারেন।’
এরপরই ডিভিশন বেঞ্চের প্রশ্ন ছিল, ‘অ্যাপটিউড টেস্ট নেওয়া হয়নি, ইন্টারভিউতে যা ইচ্ছা নম্বর দেওয়া হয়েছে বলে সিঙ্গেল বেঞ্চ জানাচ্ছে। – এটাকে কি ভাবে ব্যাখ্যা করবেন ?’ অন্যদিকে পর্ষদের তরফে বলা হয়েছে, “আমরা আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ করেছি। অপ্রশিক্ষিত প্রার্থীদের নিয়োগের ক্ষেত্রে সে সময়ে কোনও বাধা ছিল না। যারা চাকরি পেয়েছেন তারা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রশিক্ষণ সম্পূর্ণ করেছে বলেও সওয়াল প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের।
ইন্টারভিউ এবং অ্যাপটিউড টেস্টের মধ্যে খুব সামান্যই পার্থক্য আছে। সাত বছর আগে ইন্টারভিউ হয়েছে। এখন ইন্টারভিউযারদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা সঠিক সবটা বলতেও পারছেন না। সিঙ্গেল বেঞ্চ এই ৩০ জন ইন্টারভিউয়ার-এর তথ্যের ভিত্তিতেই পদক্ষেপ করছে।” ডিভিশন বেঞ্চের প্রশ্ন ছিল, এরা অপ্রশিক্ষিত ছিল বলেই চাকরি বাতিল নাকি অন্য কোনও কারণ ছিল?
জবাবে চাকরিহারাদের আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘বাঙালির মেনুতে শেষ পাতে চাটনি থাকে। হাই কোর্টেও দুর্নীতি চাটনির মতো হয়েছে। আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়েই ফাঁসি, এ কেমন রায়?’ শুনে বিচারপতি তালুকদার বলেন, চাকরি পরে হবে, আগে মেন কোর্স শেষ হোক।এদিন ডিভিশন বেঞ্চে পর্ষদ দাবি করেছে, সিঙ্গল বেঞ্চ সব কথা শোনেনি। ৭ বছর আগে নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে।
সেই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ইন্টারভিউয়াররা সবটা হয়তো মনে করে বলতে পারেননি। কয়েকজন ইন্টারভিউয়ারের বক্তব্যের ভিত্তিতে চাকরি বাতিল সঙ্গত নয়। মঙ্গলবার মামলার শুনানি অসম্পূর্ণভাবেই শেষ হয়। এদিন সিঙ্গল বেঞ্চের রায়ে কোনওরকম স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়নি। বুধবার বিকাল ফের শুনানি এই মামলার।