সানওয়ার হোসেন, সুন্দরবন : আমফান ও ইয়াসের ক্ষত এখনও দগদগে। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত নদী বাঁধ মেরামতের কাজে জোর দেওয়া হলেও, এখনও সম্পূর্ণ করতে পারেনি সেচ দপ্তর। কোথাও মাটির বাঁধ মেরামতের কাজ চলছে, আবার কোথাও স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের কাজ চলছে।
কিন্তু ক্ষয়ক্ষতির ধাক্কা কাটিয়ে উঠে যখন একটু একটু করে ঘুরে দাঁড়াচ্ছেন সুন্দরবনবাসী, এরই মধ্যে নতুন করে ঝড়ের নাম শুনলেই সিঁদুরে মেঘ দেখছেন সুন্দরবনের উপকূল এলাকার বাসিন্দারা। কারণ, এই মে মাসেই অতীতে একের পর এক দুর্যোগ ধেয়ে এসেছে সুন্দরবনের দিকে। নতুন করে ঘূর্ণিঝড় মোকার প্রভাব পড়ার আগেই নিজেদের বসতবাড়ি মেরামতের পাশাপাশি বাড়ির প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র গোছাতে ব্যস্ত ছিলেন নদী ও সমুদ্র তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দারা।
এখনও দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার কাকদ্বীপ, নামখানা, পাথরপ্রতিমা, সাগর, মথুরাপুর এক নম্বর ও মথুরাপুর দু’নম্বর সহ কুলপি ব্লকের নদী ও সমুদ্র তীরবর্তী এলাকার বহু বাসিন্দা প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার প্রকল্প থেকে বঞ্চিত। এই সমস্ত এলাকার বাসিন্দাদের বেশিরভাগের ঘরবাড়ি অ্যাসবেস্টর, টালি, খড় ও ট্রিপলের ছাউনি এবং মাটি ও ছিটে বেড়ার দেওয়াল দিয়ে তৈরি।
পরিস্থিতি খারাপ হলে বিগত দিনগুলোর মত এবারও তাদেরকে আশ্রয় নিতে হবে স্থানীয় ফ্লাড শেল্টার ও স্কুল ভবন গুলোতে। এর মাঝেই বাসিন্দাদের আক্ষেপ যদি প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার পাকা বাড়ি পেতো, তাহলে হয়তো আসন্ন দুর্যোগ নিয়ে এত আতঙ্কের মধ্যে থাকতে হতো না। আবাস যোজনার তালিকায় নাম থাকলেও এখনও বাড়ির টাকা মেলেনি অনেকেরই।
অনেকের আবার তালিকা থেকে নাম কেটে দেওয়া হয়েছে। আমার বহু বাসিন্দা বছরের পর বছর আবাস যোজনায় আবেদন জানিয়েও পাকা বাড়ি পাননি। এই পরিস্থিতিতে বিজেপির দাবি, আবাস যোজনা প্রকল্পে দুর্নীতির কারণে আজ অসহায় সুন্দরবনের উপকূল এলাকার বাসিন্দারা। তাদের সকলকে অবিলম্বে আবাস যোজনার তালিকায় নথিভুক্ত করার আবেদন জানানো হয়েছে।
অন্যদিকে তৃণমূলের পক্ষ থেকে সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে দাবি করা হয়েছে, আবাস যোজনা প্রকল্পে সুন্দরবনের বাসিন্দাদের নাম নথিভুক্ত করা হয়েছিল। প্রায় ১১ লক্ষ বাড়ির টাকা এখনও ছাড়েনি কেন্দ্র সরকার। সেই টাকা না পাওয়ার কারণেই তারা বাড়ি বাঁধতে পারছেন না।
তবে সিপিএমের দাবি, তৃণমূল ও বিজেপির জাঁতাকলে পড়ে আজ সুন্দরবনের বাসিন্দারা আরও অসহায় হয়ে পড়ছেন। আমরা চাই এই দুর্যোগের হাত থেকে বাসিন্দাদের বাঁচাতে অবিলম্বে প্রত্যেকের আবাস যোজনার তালিকায় নাম নথিভুক্ত করে পাকা বাড়ি দেওয়া হোক।