খবরজেলা

মোকা আতঙ্কে প্রহর গুনছেন সুন্দরবনের বাসিন্দারা, তৈরী মহকুমা প্রশাসন

বান্টি মুখার্জী, ক্যানিং : আবারও একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগের পূর্বাভাস। পূর্বাভাস জানতে পেরেই আতঙ্কে রয়েছেন সুন্দরবনের দীপাঞ্চলের বাসিন্দারা।আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে আবারও একটি ঘূর্ণাবর্তা সৃষ্টি হচ্ছে।সেটি শক্তিধর হলে ঘূর্ণিঝড় হয়ে স্থলভাগে আছড়ে পড়ার সম্ভবনা রয়েছে। আর সেই আতঙ্কে প্রহর গুনছেন সুন্দরবনে বসবাসকারী পঞ্চাশ লক্ষের অধিক বাসিন্দা।

এবার যে প্রাকৃতিক দুর্যোগ হতে পারে তার নাম করা হয়েছে মোকা। নামকরণ করেছেন ইয়েমেন। মূলত ইয়েমেনের লোহিত সাগরের উপকুলে প্রাচীন একটি বন্দর শহর রয়েছে। সেই বন্দর শহরের নাম ‘মোকা’। সেই নাম অনুসারে আসন্ন ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ করা হয়েছে।উল্লেখ্য, সুন্দরবনের গোসাবা ব্লকের ৯টি দ্বীপ রয়েছে। দ্বীপ এলাকার মানুষজন রয়েছেন আতঙ্কে। প্রতিবছরই বর্ষার আগে নদীবাঁধের মেরামতি হয়।

এবার এখনও পর্যন্ত তেমন কোন কাজ হয়নি বলে অভিযোগ। তার ওপর এমন ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস। সব মিলিয়ে আতঙ্কিত এলাকার মানুষজন। বিগত দিনে আম্ফান, ইয়াস এর দাপটে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে সুন্দরবনের বিস্তৃর্ণ এলাকা। ভেঙেছে অসংখ্য নদীবাঁধ, বাড়িঘর। এছাড়াও প্রায় প্রতি পূর্ণিমা ও অমাবস্যায় নদীবাঁধ ভাঙছে সুন্দরবন এলাকার বিভিন্ন প্রান্তে। আসন্ন ঘূর্ণিঝড় প্রবল ভাবে আছড়ে পড়লে সমস্ত কিছুই ভেঙে চুরমার হয়ে যাবে।

গাছপালা ভেঙে ঘরদোর ভেসে যাবে নদীর নোনা জলে। আবারও গৃহহীন হতে হবে। ২০০৯ সালে ২৫ মে আয়লা দাপট দেখিয়েছিল।সেবারে সুন্দরবন তছনছ করে দিয়েছিল আয়লা। সমগ্র সুন্দরবনের ৩৫০০ কিমি নদী বাঁধের মধ্যে আয়লাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল ৭৭৮ কিমি নদীবাঁধ। তৎকালীন সময়ে কেন্দ্র সরকার কংক্রীটের নদীবাঁধ নির্মাণের জন্য ৫০৩২ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছিল। সেই টাকায় বেশ কিছুটা নদী বাঁধ হলেও, সম্পূর্ণ বাঁধ তৈরি করা সম্ভব হয়নি।

আয়লা পরবর্তী সময়ে ফণি, বুলবুল, আম্ফান, ইয়াস নামক প্রাকৃতিক দুর্যোগ সুন্দরবনের ওপর আঘাত হেনেছিল।
অতীতে শিক্ষা নিয়ে মোকা সতর্কতার জন্য ইতিমধ্যে মহকুমা প্রশাসন কন্ট্রোলরুম খুলে নজরদারী ও সতর্কতা শুরু করেছে। তৈরী রাখা হয়েছে বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর। এছাড়াও শুকনো খাবার,ত্রিপল মজুত করার পাশাপাশি সমস্ত দফতরকে সতর্ক করা হয়েছে।

Related Articles

Back to top button
error: Content is protected !!