
হেদায়তুল্লা পুরকাইত, ডায়মন্ড হারবার: দুয়ারে পঞ্চায়েত নির্বাচন। তার আগে নতুন প্রধান করা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয় মগরাহাট পশ্চিম বিধানসভা এলাকায়। দীর্ঘদিন ধরে মগরাহাট পশ্চিম বিধানসভার নেতড়া পঞ্চায়েত ও হরিহরপুর পঞ্চায়েতে স্থানীয় প্রধান না থাকায় উপপ্রধানরা এই দুই পঞ্চায়েতে দায়িত্ব পালন করছিলেন। বৃহস্পতিবার নেতড়া পঞ্চায়েতে নতুন প্রধানের দায়িত্বভার নেন নন্দিতা ঘোষ।
নেতড়া পঞ্চায়েতে নতুন প্রধান দায়িত্ব পেতেই মগরাহাট পশ্চিম বিধানসভা এলাকার বিরোধীরা প্রশ্ন তুললেন, মগরাহাট পশ্চিম বিধানসভা এলাকার মধ্যে পড়ে নেতড়া ও হরিহরপুর পঞ্চায়েত। নেতড়া পঞ্চায়েতে যদি নতুন প্রধান হয় তাহলে হরিহরপুর পঞ্চায়েত নতুন প্রধান পাবে না কেন?২০১৮ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর মগরাহাট পশ্চিম বিধানসভার ১২টি পঞ্চায়েতের মধ্যে ১১টিতে প্রধান নির্বাচন করে তৃণমূল কংগ্রেস।
একটি পঞ্চায়েতে প্রধান বিজেপির। পরবর্তী সময়ে মগরাহাট পশ্চিম বিধানসভার ইয়ারপুর পঞ্চায়েতের সকল সদস্য তৃণমূল কংগ্রেসের যোগ দেন এবং ইয়ারপুর পঞ্চায়েত তৃণমূল কংগ্রেস প্রধান নির্বাচন করে। সব মিলিয়ে বর্তমানে মগরাহাট পশ্চিম বিধানসভা এলাকার ১২টি পঞ্চায়েত তৃণমূল কংগ্রেসের দখলে। ১২ টি পঞ্চায়েত সব কটি তৃণমূল কংগ্রেসের দখলে থাকলেও বিভিন্ন পঞ্চায়েত এলাকায় বিভিন্ন সময় দুর্নীতির অভিযোগ তুলে কখনও প্রতিবাদ করেছে বিরোধী দল।
আবার কোথাও তৃণমূল কংগ্রেসের গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব চরমে। মগরাহাট পশ্চিম বিধানসভা এলাকার হরিহরপুর পঞ্চায়েত, উত্তর কুসুম পঞ্চায়েত, নেতড়া পঞ্চায়েত এলাকায় বিভিন্ন সময় দুর্নীতি নিয়ে সবর হয়েছে স্থানীয় বাসিন্দারা থেকে শুরু করে এলাকার নেতৃত্ব। এর মধ্যে নেতড়া পঞ্চায়েত ও হরিহরপুর পঞ্চায়েত এলাকায় প্রধান পদত্যাগ করেন। অবশেষে নেতড়া পঞ্চায়েতে বৃহস্পতিবার নতুন প্রধান হিসাবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন নন্দিতা ঘোষ।
নেতড়া পঞ্চায়েতে নতুন প্রধান হতেই মগরাহাট পশ্চিম বিধানসভা এলাকার হরিহরপুর পঞ্চায়েত এলাকার বিরোধী দলের নেতা-কর্মীরা প্রশ্ন তোলেন, হরিহরপুর পঞ্চায়েতে প্রধান নির্বাচন করা হচ্ছে না কেন? সেই প্রশ্ন তুলে হরিহরপুর পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীরা সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন।
তা নিয়ে হরিহরপুর পঞ্চায়েত এলাকার সিপিএম কর্মী মুজাহিদ কবীর শেরওয়ানি জানান, মগরাহাট পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্রের মগরাহাট ১ পঞ্চায়েত সমিতির অন্তর্গত হরিহরপুর গ্রাম পঞ্চায়েত দীর্ঘদিন ধরে অচল অবস্থায় আছে। ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে তাপসী হালদার প্রধান নির্বাচিত হন। ১৬ জন সদস্যের মধ্যে ১৩ জন তৃণমূল কংগ্রেসের, ১ জন সিপিএমের, ১ জন জাতীয় কংগ্রেসের ও ১ জন নির্দল।
পরবর্তী সময়ে বিরোধী ৩ জন পঞ্চায়েত সদস্যকে ভাঙ্গিয়ে নিয়ে নিজেদের দলে যুক্ত করেন। বর্তমানে ১৬ জন সদস্যের মধ্যে অধিকাংশ সদস্য প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনেন। বিভিন্ন আইনি জটিলতার মধ্যে দিন অতিবাহিত করার পরে সর্বশেষে কিছুদিন পূর্বে প্রধান তাপসী হালদার পদত্যাগ করেন এবং তা সরকারি আধিকারিকরা গ্রহণ করেন। উপপ্রধান দুলাল মণ্ডলকে ভারপ্রাপ্ত অস্থায়ী প্রধান হিসাবে সরকারি আধিকারিকরা দায়িত্ব দেন।
তা অনেকদিন হয়ে গেল। কেন এখনও হরিয়ারপুর পঞ্চায়েতে প্রধান নিয়োগ হল না? বিধায়ক কি চোখে ঠুলি বেঁধে আছেন নাকি অন্ধ ধৃতরাষ্ট্র সেজেছেন? ওনার বিধানসভার অভ্যন্তরে নেতড়াতে যদি প্রধান নিয়োগ হয়, তাহলে হরিহরপুর অঞ্চলে হচ্ছে না কেন? ভাগাভাগির শতাংশ আছে নাকি? উত্তর চায় হরিহরপুরের জনগণ।
এবিষয়ে মগরাহাট পশ্চিম বিধানসভার বিধায়ক গিয়াসউদ্দিন মোল্লা বলেন, এটা সরকারি বিষয়। আমি তো কিছু করতে পারি না। রাজ্যে এরকম অনেক পঞ্চায়েত আছে উপপ্রধানরা চালান। সুতরাং এ বিষয়ে আমার কিছু করার নেই।