খবররাজ্য

‘দুর্নীতির মহাসমুদ্রে হাবুডুবু খাচ্ছি’, সিবিআই-কে ভর্ৎসনা বিচারপতির

স্টাফ রিপোর্টার : নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তদন্তভার নিয়েছে সিবিআই, ইডি’র মতো কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সামনে আসছে একের পর চাঞ্চল্যকর তথ্য। বুধবার প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত একটি মামলায় আদালতে রিপোর্ট দিয়ে সিবিআই জানিয়েছে, ২০১৪-র টেটের ওএমআর সরবরাহের জন্য কোনও টেন্ডার ডাকা হয়নি। জিজ্ঞাসাবাদে তদন্তকারীদের এমনটাই জানিয়েছেন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য।সিবিআই-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, মানিক আরও জানিয়েছেন, ২০১২-র টেটের জন্য টেন্ডার ডাকা হয়েছিল।

সেখানেই প্রথম বরাত পায় এস বসু রায় অ্যান্ড কোম্পানি। ভাল কাজ করায় এবং অন্য কেউ টেন্ডার জমা না দেওয়ায় ফের ওই সংস্থাকেই বরাত দেওয়া হয়।সিবিআই-এর রিপোর্ট দেখে মোটেই খুশি হননি বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। কেন্দ্রীয় সংস্থাকে রীতিমতো ভর্ৎসনা করেন তিনি। বিচারপতি বলেন, ‘নির্দ্বিধায় মিথ্যা বলার অভ্যাস মানিক ভট্টাচার্যের আছে৷ আদালতের সামনে সেটা প্রমাণিতও হয়েছে।এটা কোনও জিজ্ঞাসাবাদ হয়েছে? এর থেকে তো আমি ভাল জিজ্ঞাসাবাদ করি।

হাইকোর্টের অনেক আইনজীবীও এর থেকে ভাল জিজ্ঞাসাবাদ করবেন। তদন্ত শেষ করতে হবে তো? এটা কোন জিজ্ঞাসাবাদ? ছিঃ ছিঃ ছিঃ।’বিচারপতি আরও উল্লেখ করেন, এত ভূরি ভূরি অনিয়মের অভিযোগ আসছে এবং আদালতের কাছে এত তথ্য প্রমাণ আছে, যার ভিত্তিতে ২০১৬-র নিয়োগ প্রক্রিয়া খারিজ করে দেওয়া যায়। কিন্তু সেটা করলে বৈধভাবে চাকরি পাওয়া বহু ব্যক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন বলেও দাবি করেছেন তিনি। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘একজনও বৈধ প্রার্থী ক্ষতিগ্রস্ত হলে আমার ভাল লাগবে না।’

এখনও এই দুর্নীতিকে ঢাকতে কিছু দালাল বাজারে ঘুরে বেড়াচ্ছে বলে মন্তব্য করেন বিচারপতি। টেন্ডার ছাড়া কীভাবে একটি সংস্থাকে কাজের বরাত দেওয়া হয়েছে, সেই প্রশ্ন তুলে বিচারপতি বলেন, এটা কী হচ্ছে?মামলাকারীদের আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্যকে উদ্দেশ্য করে বিচারপতি গাঙ্গুলির মন্তব্য, “দুর্নীতির সব নদী একই সমুদ্রে গিয়ে মিশেছে , সমুদ্র থেকে মানিক বেছে তুলতে হবে। দুর্নীতির সমুদ্রে আপনারা সাহায্য করার পরেও আমি হাবুডুবু খাচ্ছি, সিবিআই তো কিছুই করছে না। তারা তো জানেও না পিছনের দরজা দিয়ে কোন কাজ হয়েছে।

এই সরকারের শিক্ষাদফতর কী করে এই দুর্নীতি দেখেও তাদের চোখ বন্ধ করে রাখল সেটা ভেবে আমি বিস্মিত। শিক্ষা দফতরের কেউ কেউ হয়তো হাতে হাত রেখে এই দুর্নীতি করেছিলেন৷”প্রায় ৪২৫০০ জনের এই প্যানেল থাকবে না বাতিল হবে সে বিষয়ে সব পক্ষের আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলে আদালত চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে বলে জানিয়েছেন বিচারপতি। আগামী সপ্তাহে ফের মামলার শুনানি।

Related Articles

Back to top button
error: Content is protected !!