
প্রদীপকুমার সিংহ, বারুইপুর: প্রাক্তন স্ত্রীকে খুনের দায় স্বামীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করলেন বিচারক। মৃত স্ত্রীর নাম মমতাজ বিবি। বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাশীপুর থানা এলাকায়। স্বামীর নাম সাদ্দাম মণ্ডল। বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসন্তী থানা এলাকায়। ঘটনাটি ঘটে কাশীপুর থানার উপ ডাকুরিয়া এলাকায়। এই মামলার বারুইপুর কোর্টের সরকারি উকিল রথীন্দ্রনাথ দাশগুপ্ত বলেন , ২০১৪ সালে সাদ্দামের সঙ্গে মমতাজ বিবির বিয়ে হয়েছিল। কিন্তু বিয়ের পরে মমতাজ বিবি শ্বশুরবাড়ি গিয়ে দেখেন স্বামীর আলাদা স্ত্রী আছে, সঙ্গে দুটি সন্তান। তাতেও মমতাজ বিবি, সাদ্দামের সঙ্গে সংসার করছিলেন।
কিন্তু দিনের পর দিন মমতাজের ওপর অত্যাচার আরম্ভ করে সাদ্দাম মণ্ডল ও তার বাড়ির লোক। মমতাজ কিছুদিন পরে নিজের কাশীপুরের বাড়িতে ফিরে যান এবং পরে সাদ্দামকে তালাক দেন। কিন্তু তাঁদের দুজনের মধ্যে মোবাইলে যোগাযোগ ছিল। ২০১৬ সালের ২৯ জুন সন্ধ্যায় সাদ্দাম মমতাজের বাড়িতে যায়। বাড়ির পাশে দু’জনে গল্প করে অনেক রাত পর্যন্ত। সাদ্দাম সেখান থেকে জুতো ফেলে পালিয়ে যায়।
মমতাজের আত্মীয় পরে দেখতে পান, মমতাজের দেহ বাড়ির পাশেই পড়ে আছে। সঙ্গে সঙ্গে তিনি চিৎকার চেঁচামেচি করলে স্থানীয় বাসিন্দারা ছুটে আসেন। কাশীপুর থানায় খবর দিলে পুলিশ মমতাজের দেহটি ময়না তদন্তের জন্য নিয়ে যায়। বাপের বাড়ির লোক মমতাজের খুনের ব্যাপারে কাশীপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ পরে সাদ্দাম মণ্ডলকে গ্রেপ্তার করে। বারুইপুর মহকুমা আদালতে সেই মামলা চলে সাত বছর ধরে।
মঙ্গলবার বারুইপুর মহকুমা আদালতের বিচারক মুন চক্রবর্তী সাদ্দাম মণ্ডলকে দোষী সাব্যস্ত করেন এবং বুধবার তাঁকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন, সঙ্গে কুড়ি হাজার টাকার জরিমানা, অনাদায়ে অতিরিক্ত চার মাস জেলে থাকার নির্দেশ দেন।
সাদ্দাম হোসেন বারুইপুর কোর্টে মামলা চলাকালীন সাত বছর সংশোধনাগারে ছিল। বুধবার ফাস্ট ট্রাক কোর্টের বিচারক মুন চক্রবর্তীর এজলাসে এই মামলাটির সাজা ঘোষণা করা হয়। সাদ্দামের আইনজীবী জানান, এই ব্যাপারে তাঁরা হাইকোর্টে আবেদন করবেন।