Wednesday, April 24, 2024
spot_img
Homeজেলাবকখালির জঙ্গলে আগুন নেভাতে হাত লাগাল এলাকার প্রমীলা বাহিনী

বকখালির জঙ্গলে আগুন নেভাতে হাত লাগাল এলাকার প্রমীলা বাহিনী

বিশ্ব সমাচার, বকখালি: অবশেষে বকখালির জঙ্গলে আগুন নেভানো সম্ভব হল। আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পরেই জঙ্গলের সবুজ গালিচার পথ কালো ছাইয়ে পরিণত হয়েছে। চারদিকে ঝলসে যাওয়া ক্যাকটাস গাছের সারি। ছাইছাপা গাছের গুঁড়ি থেকে ধোঁয়া বেরোচ্ছে। বকখালি জঙ্গলের অগ্নিকাণ্ডের পর মঙ্গলবার সেখানে এমনই দৃশ্য দেখা গেল। সোমবার রাতে আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও মঙ্গলবার সকাল থেকে আবারও বনাঞ্চলের বেশ কিছু জায়গায় ধিকিধিকি আগুন দেখা যায়। জঙ্গলের সংকীর্ণ রাস্তার জেরে সোমবার দমকলের গাড়ি ঢুকতে পারেনি।

বকখালির জঙ্গলে আগুন নেভাতে হাত লাগাল এলাকার প্রমীলা বাহিনী

তাই বকখালি বন বিভাগের পক্ষ থেকে রাতভর দু’টি জেসিবির সাহায্যে আগুন লাগা জায়গাগুলি সাদা বালি চাপা দেওয়া হয়। রাতভর বনকর্মীরা সেই আগুন নেভানোর কাজে হাত লাগান। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে পারা গেলেও সকালে কিছু কিছু জায়গায় আগুনের ফুলকি দেখা যায়। জঙ্গল বাঁচাতে তাই মঙ্গলবার ভোর থেকে আগুন নেভানোর কাজে নেমে পড়ে গ্রামের প্রমিলা বাহিনী। বালতি, কলসিতে জল ভরে জঙ্গলের আনাচে-কানাচে পৌঁছে যান তাঁরা। এঁরা বকখালি লাগোয়া গ্রামের মহিলা।

বকখালির জঙ্গলে আগুন নেভাতে হাত লাগাল এলাকার প্রমীলা বাহিনী

প্রায় ৪০ থেকে ৫০ জন মহিলা আগুন নেভানোর কাজে মঙ্গলবার সকাল থেকে কোমর বেঁধে নেমে পড়েন বকখালির জঙ্গলে। তাঁদের সাহায্য করতে বকখালি বন বিভাগের তরফ থেকে ট্রাক্টরে করে জলের ব্যারেল পৌঁছে দেওয়া হয়। সেখান থেকে জল নিয়ে চারদিক ছড়িয়ে পড়ে এই কাজ করে প্রমিলা বাহিনী। মঙ্গলবার ঘটনাস্থলে আসেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার সহ বিভাগীয় বন আধিকারিক চিন্ময় বর্মন। তিনি বকখালি বন বিভাগের রেঞ্জার বিমল মাইতি সহ অন্যান্য বনকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে পুরো জঙ্গলটা ঘুরে দেখেন।

বকখালির জঙ্গলে আগুন নেভাতে হাত লাগাল এলাকার প্রমীলা বাহিনী

তিনি সাংবাদিকদের বলেন, কেউ বা কারা জঙ্গলে ঢুকে বিড়ি বা সিগারেট জ্বালিয়ে ফেলে দেওয়ার কারণেই আগুন লাগার ঘটনা ঘটতে পারে। এছাড়াও কোন ভবঘুরে হয়তো জঙ্গলের পাতা এক জায়গায় জড়ো করে আগুন ধরাতে গিয়েই এই বিপত্তি। তবে সবটাই অনুমান। এখনও পর্যন্ত আগুন লাগার সঠিক কারণ জানা যায়নি। প্রকৃত কারণ জানতে তদন্ত করা হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।

বকখালির জঙ্গলে আগুন নেভাতে হাত লাগাল এলাকার প্রমীলা বাহিনী

সূত্রের খবর, ১০০ হেক্টরের বেশি এলাকা জুড়ে বকখালির এই বনাঞ্চল। অগ্নিকাণ্ডে প্রায় চার হেক্টর জঙ্গল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আগুনের ধরন থেকে বন বিভাগের কর্তারা বলেন, মাটিতেই এর উৎস। আর সেটা উপরের দিকে ওঠেনি। তাই বেশি ক্ষতি হয়েছে জঙ্গলের নিচু স্তরে। এদিন প্রমীলা বাহিনীর সঙ্গে জেসিবি মেশিন দিয়ে বালি ও ধুলো দিয়েও আগুন নেভানোর কাজ করা হয়।

বকখালির জঙ্গলে আগুন নেভাতে হাত লাগাল এলাকার প্রমীলা বাহিনী

ক্ষতির হিসেব বলতে গিয়ে ওই বনকর্তা বলেন, আমফান ঘূর্ণিঝড়ে যেসব গাছ উপড়ে পড়েছিল, সেসবের একটা বড় অংশ পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে। অগ্নিকাণ্ডের পর জঙ্গলে এখন চতুর্দিকে ছাই উড়ছে। যেসব জায়গায় আগুন একেবারে নিভে গিয়েছে, খানিকক্ষণ পর আবার সেখান থেকে হালকা ধোঁয়া বেরোতে শুরু করে। সমুদ্রের হাওয়ার কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

Most Popular