
স্টাফ রিপোর্টার: শবযানে দেহ নিয়ে যেতে গেলে লাগবে তিন হাজার টাকা। টাকা জোগাড় করতে না পেরে মায়ের শবদেহ চাদরে পেঁচিয়ে কাঁধে তুলেই শ্মশানের উদ্দেশে হেঁটে রওনা দিলেন ছেলে। সঙ্গ দিলেন অসহায় বৃদ্ধ বাবা। শোকসন্তপ পুত্রের কাঁধে মায়ের নিথর দেহ। এই ছবি অন্য রাজ্যের নয়, খোদ বাংলার। ঘটনাটি জলপাইগুড়ি জেলার ক্রানি এলাকার।
একটি দেহ চাদরে পেঁচিয়ে কাঁধে নিয়ে বৃহস্পতিবার রাস্তার ধার দিয়ে কার্যত জোর পায়ে হাঁটার চেষ্টা করছেন বছর চল্লিশের এক ব্যক্তি। পিছনের সেই দেহকেই কাঁধ দিয়েছেন সত্তরের এক বৃদ্ধ। আশপাশের বাসিন্দারা দাঁড়িয়ে দেখছেন। কিছুটা গিয়ে হাঁপিয়ে পড়ছেন তাঁরা। দেহ রাস্তায় নামাচ্ছেন। কিছুটা জিরিয়ে ফের কাঁধে তুলে হাঁটা। ওই দেহটি জলপাইগুড়ি জেলার ক্রানি ব্লকের বাসিন্দা লক্ষীরানি দেওয়ানের।
বুধবার জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার সকালে তাঁর মৃত্যু হয়। পরিবারের দাবি, দেহ নিয়ে যাওয়ার জন্য তিন হাজার টাকা চান স্থানীয় অ্যাম্বুলেন্স। টাকা দেওয়ার সামর্থ নেই। তাই দেহ এভাবেই নিয়ে যাচ্ছেন ছেলে ও স্বামী।জলপাইগুড়ি থেকে ক্রান্তি দূরত্ব প্রায় পঞ্চাশ কিলোমিটার। দেহ কাঁধে তুলে নেন ছেলে ও স্বামী। পাশেই হেঁটে যাচ্ছিলেন এক মহিলা।
শেষ পর্যন্ত খবরটি পৌঁছয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কাছে। একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রতিনিধিরা এগিয়ে আসেন।তবে সাত সকালে মৃতদেহ নিয়ে যাওয়ার এই করুন ছবি নাড়া দিয়েছে অনেককেই। মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে বিনামূল্যে পরিষেবা দেওয়ার ব্যবস্থা থাকলেও ব্যবস্থাপনা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। প্রশ্ন উঠছে হাসপাতালের ভেতর যারা বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্স এবং শববাহী গাড়ির পরিষেবা দিয়ে থাকেন, তাঁদের দর হাঁকানো নিয়েও।