
বান্টি মুখার্জি, ক্যানিং: স্বামী আক্রান্ত হয়েছেন প্যারালাইসড রোগে। দীর্ঘ প্রায় একবছর শয্যাশায়ী। অগত্যা স্বামীর চিকিৎসা করচ বহন করে সংসারের হাল ধরতে নামলেন বধূ।সুন্দরবনের প্রান্তিক ক্যানিং স্টেশনেই কুলির কাজ করেন গৃহবধূ হাজরা সরদার। নুন আনতে পান্তা ফুরানো সংসারের হাল ছিল স্বামী রসিদ সরদারের হাতে। ক্যানিং স্টেশনেই কুলির কাজ করে যা আয় হত, তাতে কোনও রকমে দিনযাপন হয়ে যেত। তিনি ছাড়া পরিবারে রয়েছে এক সন্তান ও স্ত্রী। ক্যানিং স্টেশনেরই পাশে গোয়ালাপাড়ার একটি ছোট্ট বাড়িতে বসবাস করেন সরদার দম্পতি।
সব কিছুই ঠিকঠাক চলছিল। বছরখানেক আগে পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী রসিদ সরদার প্যারালাইসড রোগে আক্রান্ত হন। গৃহবধূ হাজরা সরদারের উপর সংসারের জোয়াল চাপে। কী করবেন ভেবে উঠতে পারছিলেন না তিনি।অগত্যা স্বামীর দেখানো পথেই পা বাড়িয়ে স্টেশনে কুুলির কাজ শুরু করেন হাজরা। প্রথম দিকে অনেকেরই হাসি, ঠাট্টা সহ্য করতে হয়েছে। লজ্জাও লাগতে কুলির কাজ করতে।
অনেক সময় মহিলা কুলিকে পাত্তাই দিতেন না অনেকেই। অপমানে এক সময় কুলির কাজ ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু কাজ না করলে সংসার চলবে কী করে? স্বামীর চিকিৎসা খরচ বহন হবে কীভাবে? সাতপাঁচ ভেবেই আবারও ক্যানিং স্টেশনে কুলির কাজ শুরু করেন ওই বধূ। প্রতিদিন সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত কুলির কাজ করেন।
কোনও দিন ২০০, আবার কোনও দিনও ৩০০ টাকা আয় হয়। সামান্য আয়ের অধিকাংশ টাকা স্বামীর চিকিৎসায় ব্যয় করতে হয়। অবশিষ্ট টাকা দিয়েই কোনও রকমে দিন গুজরান করেন।
গৃহবধূ হাজরা সরদারের আবেদন, যদি কোনও সহৃদয় ব্যক্তি বা সংস্থা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন, তাহলে হয়তো এমন দুর্ভোগ পোহাতে হবে না।