কলকাতাখবররাজ্য

মোদীর হাতে ধরে কাল যাত্রা শুরু বাংলার প্রথম বন্দে ভারতের

স্টাফ রিপোর্টার: কাল থেকে যাত্রা শুরু করবে বাংলার প্রথম বন্দে ভারত এক্সপ্রেস।এদিন হাওড়া-এনজেপি বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের যাত্রার সূচনা করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এছাড়াও এদিন তিনি অনেক প্রকল্পের সূচনা করবেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন মুখ্যমন্ত্রী, রেলমন্ত্রী, জলসম্পদ মন্ত্রী-সহ একাধিক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী।অন্য রাজ্যগুলির মুখ্যমন্ত্রীরাও উপস্থিত থাকতে পারেন হাওড়া স্টেশনের উদ্বোধনী এই অনুষ্ঠানে।

প্রধানমন্ত্রীর দফতর দাবি করেছে, শুক্রবার যে সব প্রকল্প রাজ্য পেতে চলেছে তার মোট মূল্য ৭ হাজার ৮০০ কোটি টাকারও বেশি। এখনও পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর এই সফরের যে সূচি পাওয়া গিয়েছে তাতে প্রধানমন্ত্রী কলকাতায় এসে যাবেন সকাল ১০টা নাগাদ। এর পরে সওয়া ১১টা নাগাদ বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের উদ্বোধনের পরে তিনি যাবেন কলকাতার বন্দর এলাকায়। সেখানে আইএনএস নেতাজি সুভাষে হবে জাতীয় গঙ্গা পরিষদের বৈঠক।

সেখানে মমতা ছাড়াও যোগ দেওয়ার কথা উত্তরাখণ্ড, উত্তরপ্রদেশ, বিহার এবং ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিংহ ধামীর, যোগী আদিত্যনাথ, নীতিশ কুমার এবং হেমন্ত সোরেনের। বৈঠক শুরু হওয়ার কথা দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ। সেখানে কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রী গজেন্দ্র সিংহ শেখাওয়াত ছাড়াও কয়েক জন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী থাকবেন বলে প্রধানমন্ত্রীর দফতরের পক্ষে জানানো হয়েছে।বাংলা যে ৭ হাজার ৮০০ কোটি টাকার বেশির প্রকল্প পেতে চলেছে তার হিসাবও দিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর দফতর।

বলা হয়েছে, রাজ্যের নিকাশি ব্যবস্থার পরিকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য মিলবে ২ হাজার ৫৫০ কোটি টাকার প্রকল্প। নতুন করে নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন তৈরির জন্য ৩৩৫ কোটি টাকার প্রকল্প। হুগলি ও উত্তর ২৪ পরগনার বিভিন্ন শহরের জন্য ৯৯০ কোটি টাকার নিকাশি প্রকল্প। স্বচ্ছ গঙ্গা মিশনের জন্য মিলবে ১ হাজার ৫৮৫ কোটি টাকার প্রকল্প। বন্দে ভারত এক্সপ্রেস ছাড়াও শুক্রবার মোদী উদ্বোধন করবেন জোকা থেকে তারাতলা মেট্রো রেল। এই খাতে খরচ ২ হাজার ৪৭৫ কোটি টাকা।

এ ছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর হাত দিয়ে উদ্বোধন হবে জোকার ‘ডক্টর শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব ওয়াটার অ্যান্ড স্যানিটেশন’-এর। এই প্রকল্প বাবাদ খরচ ১০০ কোটি টাকা। উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গে রেলের বিভিন্ন প্রকল্পেরও সূচনা করবেন মোদী। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ফালাকাটা থেকে গুমানিহাট দ্বিতীয় রেল লাইন পাতার কাজ। বরাদ্দ ১ হাজার ৮০ কোটি টাকা।এদিন বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের যাত্রার সূচনা হলেও সাধারণ যাত্রীরা বন্দে ভারতে চড়তে পারবেন ১ জানুয়ারি থেকে।

তবে যাত্রা শুরু আগেই বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের স্টপের সংখ্যা বাড়াল মন্ত্রক। পাশাপাশি বৃহস্পতিবার রেল মন্ত্রকের তরফে প্রকাশিত হয়েছে বন্দে ভারতের চূড়ান্ত সময়সূচি।রেলের তরফে জানানো হয়েছে, হাওড়া থেকে বন্দে ভারত ছেড়ে থামবে বোলপুর(শান্তিনিকেতন)। এরপর মালদহ টাউন, বারসোই হয়ে থামবে নিউ জলপাইগুড়িতে। রেলের দেওয়া সময়সূচি অনুয়ায়ী হাওড়া থেকে সকাল ৫টা ৫৫ মিনিটে ছাড়বে বন্দে ভারত। বোলপুরে গিয়ে পৌঁছাবে সকাল ৭টা ৪৩ মিনিটে। সেখান থেকে ছাড়বে ৭টা ৪৫ মিনিটে।

মালদহ টাউনে গিয়ে পৌঁছবে ১০টা ৩২ মিনিটে। মালদহ টাউনে ৩ মিনিট থেকে ট্রেনটি ছাড়বে ১০টা ৩৫ মিনিটে। ট্রেনটি বারসই স্টেশনে গিয়ে পৌঁছবে ১১টা ৫০ মিনিট। থামবে ২ মিনিট। বারসই থেকে বন্দে ভারত ছেড়ে নিউ জলপাইগুড়িতে গিয়ে পৌঁছবে দুরুর ১টা ২৫ মিনিটে। সবেমিলিয়ে মোট ৭ ঘণ্টা ৩০ মিনিটের সফর।বন্দে ভারতের এক্সিকিউটিভ ক্লাসে ভাড়া পড়বে ৩,২৫০ টাকা।

চেয়ার কারে ভাড়া প্রায় ১,৮৭০ টাকার মতো হতে চলেছে। আইআরসিটিসির তথ্য অনুযায়ী, হাওড়া-নিউ জলপাইগুড়ি শতাব্দী এক্সপ্রেসে চেয়ার কারের ভাড়া ১,৬৫০ টাকার মতো পড়ছে। জানা গিয়েছে, বন্দে ভারতে খাবার দেওয়া হবে। হাওড়া থেকে নিউ জলপাইগুড়ির পথে ট্রেনে প্রাতঃরাশ এবং দুপুরের খাবার দেওয়া হবে যাত্রীদের। রিপোর্টে দাবি করা হচ্ছে, যাত্রীদের ওয়েলকাম ড্রিঙ্ক হিসেবে দেওয়া হবে ডাবের জল।

সকাল সাতটায় দেওয়া হবে জল-খাবার। বেলা বারোটায় দেওয়া হবে লাঞ্চ। অন্যদিকে নিউ জলপাইগুড়ি থেকে হাওড়ার পথে ট্রেনে স্ন্যাক্স হিসেবে দেওয়া হবে চা, সিঙাড়া, কেক বা মিষ্টি। ব্যবস্থা থাকবে নৈশ আহারেরও।

Related Articles

Back to top button
error: Content is protected !!