স্টাফ রিপোর্টার: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নয়, রাজ্যের মাটিতে কেন্দ্রীয় এজেন্সির দাপাদাপির পেছনে আসল কারণের নেপথ্যে অন্য বিজেপি নেতারা৷সোমবার রাজ্য বিধানসভায় নিজেই জানিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। নাম না-করে বুঝিয়ে দিলেন, তাঁর নিশানায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।রাজ্যে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার বিরুদ্ধে সোমবার বিধানসভায় নিন্দাপ্রস্তাব এনেছিল মমতার সরকার।
সোমবার দুই বিধায়ক নির্মল ঘোষ ও তাপস রায় একযোগে ওই নিন্দাপ্রস্তাব আনেন বিধানসভায়। সেই প্রস্তাব পাশও হয়ে যায় ১৮৯-৬৪ ভোটে।বিতর্ক চলাকালীন বিধানসভায় সরব হন মমতা। প্রধানমন্ত্রী মোদীকে ছাড় দিয়ে বিজেপি নেতাদের তিনি কড়া আক্রমণ করেন।বিধানসভায় মমতা সরাসরিই বলেন, প্রধানমন্ত্রীকে এ সবের জন্য তিনি দোষ দিতে রাজি নন। তাঁর কথায়, ‘‘সিবিআই এখন প্রধানমন্ত্রীর দফতরে নেই।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের অধীনে আছে। কলকাতায় ২১টা ইডি রেড হয়েছে। এক মাসে ১০৮টা কেস করেছে সিবিআই, ইডি। আমি বিশ্বাস করি না, এটা নরেন্দ্র মোদী করছেন। বিজেপি নেতারা এসব করছেন।’’কিন্তু কোন কোন বিজেপি নেতা, তা বলেননি।তবে মুখ্যমন্ত্রী বিধানসভায় এ-ও বুঝিয়ে দেন, যে সিবিআই তদন্ত নিয়ে তাঁর আপত্তি নেই। কিন্তু ‘নিরপেক্ষ তদন্ত’ হওয়া দরকার। বিধানসভার অধিবেশনে মমতা বলেন, ‘‘একটা রেজোলিউশন (প্রস্তাব) সরকার আনতেই পারে। এটা ক্রিতদাসদের সরকার নয়! এটা স্বাধীনচেতা সরকার।’’
মমতা আরও বলেন, ‘‘গেরুয়া সেজে বসেছেন চোর। দেখে নেবে বলছে! যারা গ্যাস বেলুনের মতো ফুলেছ, শেষ হয়ে যাবে। নিরপেক্ষতা আনতেই এই প্রস্তাব। মধ্যরাতে কারও কারও বাড়ি চলে যাচ্ছে! তৃণমূলে থাকলে চোর আর বিজেপিতে গেলে ওয়াশিং মেশিন!’’ মমতার আরও অভিযোগ, ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটকে নজরে রেখে এসব পরিকল্পনা করছেন কেন্দ্রীয় এবং স্থানীয় বিজেপি নেতারা।তাঁর চ্যালেঞ্জ, “বিজেপি নেতাদের বাড়িতে ইডি-সিবিআই তল্লাশি করতে বলব।
টাকার পাহাড় পাবে। তল্লাশির সময় আমরা সঙ্গে থাকব, দেখিয়ে দেব, কার কোথায় ক’টা ফ্ল্যাট রয়েছে।” সোমবার বিধানসভায় নাম না করে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকেও তুলোধোনা করেন মুখ্যমন্ত্রী। পুরুলিয়ায় চাকরি বিক্রি প্রসঙ্গ তুলে মমতার খোঁচা, ‘তুমি মহারাজ সাধু হলে আজ।”
তবে এদিন বিধানসভায় সৌজন্যের রাজনীতির নজির গড়লেন মুখ্যমন্ত্রী। বিধানসভায় শাসকদলের পাশাপাশি বিজেপি বিধায়কদেরও শারদ শুভেচ্ছা জানান মমতা। শাসকদলের বেঞ্চের সামনে হাতজোড় করে শুভেচ্ছা জানান তিনি। এরপর সোজা চলে যান বিরোধী বেঞ্চের দিকে।
সেখানেও হাতজোড় করে শারদীয়ার শুভেচ্ছা জানান তিনি। সেইসময় উঠে দাঁড়িয়ে সৌজন্য দেখিয়ে প্রতি নমস্কার জানান বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী-সহ বিরোধী বিধায়করা।