প্রদীপকুমার সিংহ, বারুইপুর: বড়সড় দুর্নীতির অভিযোগ উঠল বারুইপুর প্রধান ডাকঘরে। মোট ১ কোটি টাকা তছরুপের অভিযোগ বারুইপুর থানায় লিখিতভাবে দায়ের করেছেন ডাকঘরের অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপারিনটেন্ডেট অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। এই ঘটনায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে ডাকঘরে।সূত্রের খবর, এই ঘটনায় পোস্টমাস্টার সহ অ্যাসিস্ট্যান্ট পোস্টমাস্টার, ট্রেজারি বিভাগের কর্মী সহ সাতজনকে সাসপেন্ড করা হয়েছিল।
এই ব্যাপারে ডাকঘরের কর্মীরা মুখে কুলুপ এঁটেছেন। কীভাবে গ্রাহকদের সঞ্চয়ের টাকা তছরুপ করা হল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বারুইপুর থানার পুলিস ঘটনার তদন্ত শুরু করে প্রাক্তন পোস্টমাস্টার, ট্রেজারারসহ তিনজনক গ্রেপ্তার করেছে।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২৭ এপ্রিল বারুইপুর থানায় অভিযোগে জানানো হয়, বারুইপুর প্রধান ডাকঘরের অ্যাকাউন্টে ১ কোটি ৩৫ লক্ষ টাকা ব্যাঙ্কে জমা দেওয়ার কথা ছিল ২০১৯ সালের ২৩ সেপ্টেম্বরের মধ্যে।
কিন্তু ডাকঘরের পাশে স্পটে ব্যাঙ্কে ব্যাঙ্কে জমা দেওয়া হয়েছে মাত্র ৩৫ লক্ষ টাকা। বাকি ১ কোটি টাকা জমা পড়েনি বলে অভিযোগ। অভিযোগে নাম আছে সেই সময়ের ট্রেজারার প্রদীপ মারিকের। যিনি বর্তমানে ফলতা ডাকঘরের সাবমাস্টার হিসেবে কর্মরত। ঘটনাটি ঘটেছিল ২০১৫ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৩ সালের ২৩ সেপ্টেম্বরের মধ্যে। ডাকঘর সূত্রে খবর, ঘটনা যে সময় ঘটেছিল, সেই সময় দেবাশিস রক্ষিত ওই ডাকঘরের পোস্টমাস্টার হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
এই প্রধান ডাকঘরের অধীনে ৬৮টি ডাকঘর আছে। প্রতিদিন আনুমানিক ৭০-৭৫ লক্ষ টাকা জমা হয় প্রধান ডাকঘরে। এই ঘটনার পরে গ্রাহকদের টাকা রাখা নিয়ে বড় প্রশ্ন উঠেছে। সূত্রের খবর, ঘটনার পরিপেক্ষিতে গত ২ মে পোস্টমাস্টার দীপঙ্কর দাস, অ্যাসিস্ট্যান্ট পোস্ট মাস্টার প্রলয় মণ্ডল, তৎকালীন ট্রেজারার প্রদীপ মারিক সহ ৭ জনকে সাসপেন্ড করার নোটিস দেয় সাউথ প্রেসিডেন্সি ডিভিশনের উচ্চ কর্তৃপক্ষ।
প্রাক্তন পোস্টমাস্টার দেবাশিস রক্ষিত, ট্রেজারার প্রদীপ মারিক ও রাজেন্দ্র দত্তকে সোমবার রাতে গ্রেপ্তার করে বারুইপুর থানার পুলিশ। ধৃতদের বিরুদ্ধে ৪০৯ ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ।