রাজকুমার সূত্রধর, কলকাতা : এই শহর ও জেলা জুড়ে ফুটবল উন্মাদনায় বাঙাল আর ঘটির লড়াইয়ের ইস্টবেঙ্গল আর মোহনবাগান এই দু’টি ক্লাবের লড়াই ঘরে ঘরে। কারণ, এই দু’টি ক্লাবের সমর্থক প্রচুর। এরপর রয়েছে মহামেডান স্পোটিং ক্লাব। তবে তার সমর্থক ওই বড় দু’টি ক্লাবের মতো নয়। কলকাতার বাইরেও মানুষ ওই দু’টি ক্লাবকেই চেনে বেশি করে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এর হাত ধরে ডায়মন্ডহারবার ফুটবল ক্লাব তৈরি হওয়াতে ইস্টবেঙ্গল ও মোহনবাগান ক্লাবের সমর্থকদের ভিতর ভাঙন শুরু হয়েছে। বিশেষ করে ডায়মন্ডহারবার লোকসভা কেন্দ্র জুড়ে এতদিন যারা মোহনবাগান ও ইস্টবেঙ্গলের হয়ে গলা ফাটাতেন।
এবার তারাই সরে এসেছেন। এখন তাদের গলায় ডায়মন্ডহারবার ফুটবল ক্লাবের কথা শোনা যাচ্ছে। এ নিয়ে গর্ব অনুভব করছেন। বিধায়ক পান্নালাল হালদারের কথায় তা ধরা পড়েছে। কি বলছেন তিনি। মোহনবাগানের কট্টর সমর্থক ডায়মন্ডহারবার বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক পান্নালাল হালদার।স্কুল জীবন থেকে তিনি মোহনবাগানের ভক্ত। পরবর্তী সময়ে রাজনীতি ও আইনপেশাতে এসেও ফুটবলের জগতে তাঁর এই মোহনবাগান প্রীতি কেউ ভাঙতে পারেনি। এখন বিধায়ক হলেও জোর গলায় বলেন, কলকাতা ময়দানে ফুটবল খেলা হলে মোহনবাগানের জন্য প্রতিদিন প্রার্থণা করি।
আর কোনও খেলায় যদি ইস্টবেঙ্গলের মুখোমুখি হয়। তা হলে সকাল থেকে উপোস। যতক্ষণ না মোহনবাগান জিতছে ততক্ষণ খাওয়া বন্ধ থাকে। কিন্তু অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৈরি ডায়মণ্ডহারবার ফুটবল ক্লাব প্রকাশ্যে আসার পর সেই মোহনবাগান প্রীতিতে বিধায়কের ফাটল দেখা দিয়েছে। তা নিজেই স্বীকার করেছেন পান্নালালবাবু। তিনি বলেন, এতদিন মোহনবাগান আমার কাছে প্রথম অগ্রাধিকার ছিল। এখন সেখান থেকে সরতে হয়েছে। এখন অগ্রাধিকার ডায়মন্ডহারবার ফুটবল ক্লাব। তারপর মোহনবাগান। বিধায়ক আরও জানিয়েছেন, কলকাতার ময়দানে খুব শীঘ্রই ডায়মন্ডহারবার ফুটবল ক্লাবকে খেলতে দেখা যাবে।
প্রথম ডিভিশনের মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গল এর সঙ্গে নিশ্চয়ই ডায়মন্ডহারবার ক্লাবের খেলা হবে। সেক্ষেত্রে যদি কখনও মোহনবাগানের সঙ্গে ডায়মন্ডহারবারের খেলা হয়। তখন কাকে সমর্থন করবেন বিধায়ক? পান্নালাল হালদারের কথায়, এখানে কোনও দোলাচল নেই। ডায়মন্ডহারবার ক্লাবের হয়ে গলা ফাটাবো। কারণ, এখন এই ক্লাবই আমাদের প্রথম পছন্দ। তারপর মোহনবাগানকে রাখছি। বিধায়ক বলেন, এই ডায়মন্ডহারবার আমাকে অনেক কিছু দিয়েছে। এখানকার চেয়ারম্যান হয়েছি।
ফের এই বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক এখন। ফলে এই দুর্বলতা আসা স্বাভাবিক। ডায়মন্ডহারবার ক্লাব তৈরির পর থেকে এমন প্রতিক্রিয়া অনেকের। আগে ডায়মন্ডহারবার লোকসভা কেন্দ্রের যারা মোহনবাগান ও ইস্টবেঙ্গলের কট্টর সমর্থক ছিলেন।মহেশতলা, বজবজ, পুজালি, বিষ্ণুপুর, ফলতা থেকে মেটিয়াবুরুজ সব জায়গাতে এমন বহু মানুষ তাদের সমর্থনের জায়গাতে এখন ডায়মন্ডহারবার ফুটবল ক্লাবের কথা বলছেন।
তাদের কথায়, আগামীদিনে যখন কলকাতা ময়দানে বড় ক্লাবের সঙ্গে খেলা হবে। তখন এই এলাকার মানুষ এতদিন যারা লাল হলুদ ও মেরুন জার্সি নিয়ে দাপাদাপি করত। তারা এবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডায়মন্ডহারবার ফুটবল ক্লাবের জার্সি ও পতাকা নিয়ে গলা ফাটাবে। সেইভাবে এখন থেকে ঘরে ঘরে পতাকা তৈরি শুরু হয়েছে।