Friday, April 19, 2024
spot_img
Homeজেলাঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখছে ঘোড়ামারা

ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখছে ঘোড়ামারা

বিশ্ব সমাচার, ঘোড়ামারা: দক্ষিণ ২৪ পরগনার সাগর ব্লকের অন্তর্গত ঘোড়ামারার পরিচিতি সারা বিশ্বের কাছে ডুবন্ত দ্বীপ হিসেবে। একদিকে মুড়িগঙ্গা আর অপর দিকে হলদি নদীর সাঁড়াশি আক্রমণে প্রতিদিন আয়তন কমছে রাজ্যের ক্ষুদ্রতম গ্রাম পঞ্চায়েত ঘোড়ামারার। গত বছর ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে নদীবাঁধ ভেঙে গোটা ঘোড়ামারা প্লাবিত হয়েছিল। ভেঙে পড়েছিল অধিকাংশ মাটির বাড়ি। সব খুইয়ে দ্বীপের একমাত্র আশ্রয়স্থল ফ্লাড সেন্টারে আশ্রয় নিয়ে প্রাণ বাঁচাতে পেরেছিলেন কয়েক হাজার মানুষ।

ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখছে ঘোড়ামারা

বন্যার নোনা জল একদিকে বন্ধ্যা করে দিয়েছে ঘোড়ামারার উর্বর কৃষিজমি। অপরদিকে, ঝড়ের দাপটে নষ্ট হয় গিয়েছে এই এলাকার মানুষের জীবিকা নির্বাহের অন্যতম মাধ্যম সমস্ত পানের বরজ। সারা বছর জুড়ে চাষবাস না হওয়ায় রুজি-রুটির প্রয়োজনে প্রতিদিন ভিন রাজ্যে পাড়ি দিচ্ছিল এলাকার অসহায় কর্মহীন পরিবারগুলি। ঠিক এই পরিস্থিতিতে ঘুরে দাঁড়ানোর পথ খুঁজে নেওয়ার লক্ষ্যে একগুচ্ছ উদ্যোগ নিল ঘোড়ামারা গ্রাম পঞ্চায়েত। বুধবার, এই গ্রাম পঞ্চায়েতের উদ্যোগে এলাকার মানুষজনকে নিয়ে এক কর্মশালার আয়োজন করা হয়।

ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখছে ঘোড়ামারা

অংশগ্রহণ করেন দেড় শতাধিক মানুষ। বিভিন্ন সরকারি তহবিলকে কাজে লাগিয়ে মুরগি-হাঁস পালন, পানের বরজ তৈরি, জৈব চাষের মতো জীবিকা উন্নয়ন মূলক প্রকল্প রূপায়ণের পরিকল্পনা নেওয়ার পাশাপাশি রাজ্যের প্রথম প্লাস্টিকমুক্ত গ্রাম পঞ্চায়েত গড়ে তোলার শপথ স্বতঃস্ফূর্তভাবে নিলেন সভায় উপস্থিত মানুষজন। পরে এ বিষয়ে গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সঞ্জীব সাগর বলেন, প্রকৃতির সঙ্গে লড়াই করার সামর্থ্য না থাকলেও পঞ্চায়েত এলাকার মানুষের জন্য বিকল্প আয়ের উৎস খুঁজে নেওয়ার মাধ্যমে স্থানান্তরের প্রবণতা কমানো সম্ভব।

ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখছে ঘোড়ামারা

এজন্য গ্রাম পঞ্চায়েত একগুচ্ছ সমন্বিত পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এদিনের সভার অন্যতম আলোচক পঞ্চায়েত কর্মচারী শুভ্রকান্তি জানা এ প্রসঙ্গে বলেন, গ্রাম পঞ্চায়েতের এই সমন্বিত উদ্যোগে এলাকার মহিলাদের স্বনির্ভর দলগুলির পাশাপাশি পুরুষদের স্বনির্ভর দলও গঠন করে এই উদ্যোগে শামিল করা হবে।

ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখছে ঘোড়ামারা

সভা শেষে বাড়ি ফেরার পথে স্থানীয় মন্দিরতলা গ্রামের শেখ এসার বলেন, সারা বছর ধরে চাষবাস না হওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছিলাম। বৌ-বাচ্চার মুখে দু’বেলা দু-মুঠো ভাত তুলে দেওয়ার জন্য অন্যত্র চলে যাওয়াই যখন ভবিতব্য বলে মেনে নিয়েছিলাম, সেই সময় গ্রাম পঞ্চায়েতের এই উদ্যোগ আমাদের নতুন করে বাঁচার পথ দেখাচ্ছে

Most Popular