খবরজেলা

গঙ্গাসাগরে হাজার হাজার পুণ্যার্থীর পিতৃতর্পণ, কপিলমুনির মন্দিরে পুজো

সমরেশ মণ্ডল, গঙ্গাসাগর: কথায় আছে, ‘সব তীর্থ বারবার, গঙ্গাসাগর একবার !’আর তাই বুধবার মহালয়ার পবিত্র লগ্নে গঙ্গাসাগরে পুণ্যস্নান ও তর্পণের জন্য প্রচুর মানুষ ভিড় জমিয়েছেন। কোভিডের কথা মাথায় রেখে এ বছর সোশ্যাল ডিসট্যান্স মেনে মাস্ক পরে কপিলমুনির মন্দিরে পুজো দেওয়া হয়। কোনও কোনও পুণ্যার্থী দানধ্যানও করছেন। কেউ কেউ আবার বাবার মন্দিরের সামনে নারকেল ফাটিয়ে পরিবারের শান্তি কামনা করেছেন। যদিও অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর কোভিডের জন্য বাইরের পুণ্যার্থীর সংখ্যা অনেক কম, স্থানীয় পুণ্যার্থীই বেশি।

গঙ্গাসাগরের পাড়ে মাইকিং করে পুলিশের পক্ষ থেকে ক্রমাগত পুণ্যার্থীদের সতর্ক করা হয়। সমুদ্র উত্তাল থাকার কারণে পুণ্যার্থীদের বেশি দূরে স্নান করতে না যাওয়ার জন্যও বারবার প্রশাসনের পক্ষ থেকে অনুরোধ করা হয়।মহালয়া উপলক্ষে বুধবার ভোর থেকেই সাগরের নদীতটে তর্পণের জন্য ভিড় জমিয়েছিলেন সাধারণ মানুষ। সেই তর্পণকে কাজে লাগিয়ে এবার জনসংযোগ বাড়ানোর চেষ্টা করে তৃণমূল কংগ্রেস। দলীয় নেতৃত্বের নির্দেশে মহালয়ার তর্পণকে কেন্দ্র করে উৎসবমুখর হয়ে ওঠে সাগরদ্বীপ।

স্থানীয় বিধায়ক তথা সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী বঙ্কিমচন্দ্র হাজরা এদিন অন্যান্য পুণ্যার্থীর সঙ্গে সাগরে স্নান করেন ও তর্পণ সারেন। পরে তিনি কপিলমুনির মন্দিরে পুজো দেন। পাশাপাশি দলীয় কর্মীরাও তর্পণ সারেন। কয়েক হাজার মানুষ এদিন গঙ্গাসাগরের সমুদ্রতটে পুণ্যস্নানের পাশাপাশি তর্পণ করেন। তাঁদের জন্য জল-মিষ্টির ব্যবস্থা করেছিল তৃণমূল নেতৃত্ব। এমনিতেই করোনার কারণে পর্যটকদের আনাগোনা ইদানীং কমই দেখা যায় সাগরে। কিন্তু এদিন তর্পণ করতে ভিড় জমিয়েছিলেন কয়েক হাজার পুণ্যার্থীরা। যাতে কোনো বিপদ বা বিঘ্ন না ঘটে তার জন্য স্থানীয় ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং ও নজরদারি চালানো হয় সিভিল ডিফেন্সের তত্ত্বাবধানে।

সমুদ্র উপকূল এলাকায় সাগর ব্লকে সিভিল ডিফেন্স এবং সুন্দরবন জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে সিভিক পুলিশ এবং পুলিশ আধিকারিকরা ছিলেন সাগর তটে। সাগর ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে কচুবেড়িয়া ভেসেল ঘাট, গঙ্গাসাগরের সমুদ্রতটে মাস্কবিহীন পুণ্যার্থীদের হাতে ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাস্ক বিতরণ করা হয়। পাশাপাশি পানীয় জলের ব্যবস্থা করা হয়। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মহালয়ার পুণ্যলগ্নে গঙ্গাসাগর সমুদ্র তটে ৩০ হাজারের বেশি পুণ্যার্থী সমুদ্রে তর্পণ সেরে কপিলমুনির মন্দির পুজো দেন।

সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী বঙ্কিম হাজরা বলেন, মহালয়ার পুণ্যলগ্নে পবিত্র গঙ্গায় পিতৃতর্পণ করে পুজো দিলাম। এদিন ছিল পিতৃপক্ষের অবসান এবং দেবীপক্ষের সূচনা। তাই এই দিনেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চেয়ে কপিলমুনির পাদদেশে অর্ঘ্য নিবেদন করলাম। পাশাপাশি ভারতবর্ষে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি যাতে বজায় থাকে, সেই প্রার্থনাও জানালাম।

Related Articles

Back to top button
error: Content is protected !!